ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:
কলেজছাত্রী শরীফা আক্তার (২৪) আত্মহত্যা করেননি, তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের পর তিন মাস পেরিয়ে গেলেও পুলিশ অভিযুক্ত বখাটে সোহেলকে গ্রেফতার করতে পারেনি। উল্টো বাঁদিকে পুলিশ হয়রানি করছে। বৃহস্পতিবার শরীফার পরিবারের সদস্যরা এ অভিযোগ করেন।
জানা গেছে, শরীফার লাশ উদ্ধারের পর থেকেই পুলিশ গড়িমসি করে আসছে। তার পরিবার হত্যা মামলা করতে চাইলেও পুলিশ আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ করতে বাধ্য করে। ১০ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কলেজপাড়ার ভাড়াবাসা থেকে শরীফার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) স্থানান্তর করা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ধর্মজিৎ সিংহকে ফোন করলে পরিচয় পেয়ে ব্যস্ত বলে তিনি ফোন রেখে দেন। পরে এসএমএস পাঠিয়েও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
সিভিল সার্জন ডা. মো. শাহ আলম জানান, ভিসেরা রিপোর্টে শরীফাকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়। ধর্ষণের পর তাকে হত্যা করা হয়েছে তা স্পষ্ট। ৩ নভেম্বর ভিসেরা প্রতিবেদন দেয়া হয়। এর আগে ময়নাতদন্তেও বলা হয়- ধর্ষণের পর শরীফাকে হত্যা করা হয়েছে।
নবীনগর উপজেলার বিদ্যাকুট গ্রামের মো. মজিবুর রহমানের মেয়ে শরীফাকে একই গ্রামের বখাটে যুবক সোহেল ২০১২ সাল থেকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। তার সঙ্গে শরীফাকে বিয়ে দেয়ার জন্য সোহেল পরিবারকে বারবার চাপ দেয়। বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় রাস্তাঘাটে সোহেল তাকে মারধরও করে।
কলেজপাড়ার ভাড়াবাসায়ও সোহেল তাকে উত্ত্যক্ত করত। এদিকে লাশ উদ্ধারের পর থেকে পুলিশ বলে আসছে- গলায় ফাঁস দিয়ে শরীফা আত্মহত্যা করেছেন। তবে পরিবারের দাবি, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পর শরীফার বাবা মজিবুর রহমানকে দিয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করায় পুলিশ।
শরীফার বোন জোনাকী জান্নাত জানান, পুলিশের কাছে গেলে মনে হয় আমরাই আসামি। মজিবুর রহমান বলেন, পুলিশের চাপাচাপির কারণেই তিনি আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করতে বাধ্য হন। ময়নাতদন্ত ও ভিসেরা রিপোর্ট পেয়েও কর্ণপাত করছে না। আসামিকে না ধরে উল্টো তাকে হয়রানি করছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। হত্যাকারীকে দ্রুত গ্রেফতার করার দাবি জানান তিনি