বরগুনা প্রতিনিধি:
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও স্বাধীনতা সংগ্রাম কমিটির সভাপতি মজিবুল হকের নাম রয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে সদ্য প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায়। এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাসহ আওয়ামী লীগ নেতারা।
সোমবার সরকারি কেএম মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গেলাম বলেন, পাথরঘাটা আওয়ামী লীগ বলতে প্রথমে যার নাম নিতে হয় তিনি মজিবুল হক। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার ভূমিকার কারণে পাথরঘাটা রাজাকারমুক্ত হয়েছিল। আজ সেই ইতিহাস উল্টে গেছে। মজিবুল হকের নাম রাজাকারের তালিকায় প্রকাশ পাওয়ায় এই এলাকার মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এই চক্রান্তের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। এ সময় উপস্থিত শত শত মুক্তিযোদ্ধা করতালি দিয়ে তার বক্তব্যের সমর্থন জানান।
পাথরঘাটা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি আব্দুল মন্নান হাওলাদার জানান, 'মজিবুল হক তার জীবন যৌবন সব আওয়ামী লীগকে দান করে গেছেন। তিনি এক সময় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে একই মঞ্চে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। দক্ষিণাঞ্চলে বঙ্গবন্ধু যাকে আওয়ামী লীগ বলে চিনতেন তিনিই মজিবুল হক। ১৯৮৬ সালে বরগুনা-২ আসন থেকে মজিবুল হক আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ নির্বাচন করেন। তিনি মারা যাওয়ার পর পাথরঘাটায় মুক্তিযোদ্ধারা প্রতি বছর তার জন্য দোয়ার আয়োজন করেন। এসব আয়োজন আজ মিথ্যা হয়ে গেছে। আমরা আজ মহান বিজয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠান থেকে মজিবুল হকের বিরুদ্ধে চক্রান্তকারীদের বিচার দাবি করছি।'
মুক্তিযোদ্ধারা জানান, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ ছিলেন মো. মজিবুল হক। মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ গঠন থেকে শুরু করে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত পাথরঘাটা সংগঠনের সভাপতি ছিলেন মো. মজিবুল হক। পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের টানা ৪০ বছর সভাপতি ছিলেন তিনি, ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন।
এ ছাড়া তালিকায় পাথরঘাটা উপজেলার ৩ জন মুক্তিযোদ্ধার নামও রয়েছে। এ নিয়ে পাথরঘাটায় চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয়েছে।