![]() |
নিজ স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে শিক্ষিকা |
অনলাইন ডেস্ক: বাগের হাটের প্রাইমারী স্কুলের এক শিক্ষিকা মায়ের আবেগঘন স্ট্যাটাস। হুবুহু তুলে ধরা।
"ছেলেটার তখন বছর চারেক বয়স। আমি তখন গোপালগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতে কর্মরত। ওকে একদম সময় দিতে পারতাম না। একদিন গলা জড়িয়ে ধরে বলল, "আম্মু, তোমার অফিসের সবার ভাগ্য কত ভালো! তারা সারা দিন তোমাকে দেখতে পায় কিন্তু আমি দেখতে পাইনা! " ওই টুকুন ছেলেকে কীভাবে বোঝাবো! ওর কাছে আমার যে গুরুত্ব সেটা বাকি পৃথিবীর কারো কাছেই নেই।
ছেলেটা এবার জেএসসি পরীক্ষা দিল এবং মেয়ের পিইসি পরীক্ষা এখনো চলমান। এরমধ্যে আবার আমার বিএড পরীক্ষা চলছে। যে কারণে এ কয়দিন অনলাইনে তেমন আসার সুযোগ হয়নি।
আজ সন্ধ্যায় অনলাইনে ঢুকে একটা নিউজে চোখ আটকে গেল। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে আমার শ্রমিক ভাইয়েরা অনেক পিইসি পরীক্ষার্থীদের যেতে দেননি যে কারণে তারা কয়েকটি পরীক্ষা দিতে পারেনি।
আমি একজন সাধারণ শিক্ষক। আমার বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী শ্রমিকদের সন্তান। আপনাদের ছেলে মেয়েকেই আমরা সন্তান স্নেহে বুকে জড়িয়ে রাখি।
যাদের আজ পরীক্ষা দিতে দেননি ওরাও আপনার আমার মতো কারো সন্তান। কাকে জিম্মি করে ধর্মঘট করছেন? কতটা লাভবান হয়েছেন?
প্রাথমিক শিক্ষকরাও বেতন বৈষম্যের কারণে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন। আমরাও সমাপনী বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিলাম। দাবিতে অনড় থাকলে হয়তো আমাদের দাবিও পূরণ হতো। কিন্তু এই কচি কাঁচা মায়াবী মুখ গুলোর দিকে তাকিয়ে আমরা পারিনি ওদের জিম্মি করে দাবি আদায় করতে। আমরা আমাদের কর্মসূচী বাতিল করেছি, পরীক্ষা নিচ্ছি।
আমাদের কাছে আমাদের শিক্ষার্থীদের যে গুরুত্ব আপনাদের কাছে আপনাদের সন্তানদের সে গুরুত্ব নেই। এটুকুই বলবো, যতখুশি ধর্মঘট করুন দয়াকরে শিশুদের জিম্মি করবেন না।
কতৃপক্ষের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ যেসব শিক্ষার্থী ধর্মঘটের কারণে পরীক্ষা দিতে পারেনি তাদেরকে বাকি পরীক্ষার অনুপাতে গড় নম্বর দেয়ার ব্যবস্থা করুন অথবা আবার পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দিন। ওদের জীবন থেকে একটি বছর হারিয়ে যেতে দেবেন না"