যশোরে একাধিক মামলার আসামী যুবলীগ নেতা গ্রেফতার - Meghna News 24bd

সর্বশেষ


Tuesday, January 14, 2020

যশোরে একাধিক মামলার আসামী যুবলীগ নেতা গ্রেফতার


যশোর প্রতিনিধি: যশোর জেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক ও একাধিক মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানভুক্ত বহুল আলোচিত আসামি জাহিদ হোসেন মিলন ওরফে টাক মিলনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার যশোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ।
যশোর গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মারুফ আহমেদ জানান, মঙ্গলবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলামের আদালতে মিলনকে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। আদালত আগামী রোববার শুনানির দিন ধার্য করে মিলনকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত ১২ জানুয়ারি রোববার সন্ধ্যায় দুবাই থেকে স্ত্রী, সন্তান নিয়ে দেশে ফেরার পথে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার হয়েছে মিলন। এরপর সোমবার যশোর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়ে।
যশোর পুলিশের মুখপাত্র মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, জাহিদ হোসেন মিলনের বিরুদ্ধে আদালতের তিনটি গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে নানা অপরাধে তথ্য পুলিশ হেডকোয়ার্টারে ছিল। তিনি দুবাই থাকেন এবং প্রায়ই দেশে আসেন, এমন তথ্য ছিল পুলিশের কাছে। এরপর পুলিশের পক্ষ থেকে ইমিগ্রেশন পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। রোববার সন্ধ্যায় দুবাই থেকে ফেরার পথে ইমিগ্রেশন পুলিশ মিলনকে গ্রেফতার করে আমাদের জানায়। পরে সোমবার আসামিকে যশোর ডিবি পুলিশের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়েছে। মঙ্গলবার আদালতে সোপর্দ করে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।
এদিকে জেলা পুলিশের মিডিয়া সেল থেকে জানানো হয়েছে, যশোর শহরের পুরাতন কসবার রোস্তম আলীর ছেলে জাহিদ হোসেন মিলন ওরফে টাক মিলন (৪৭) নামে হত্যা, বিস্ফোরক আইনে অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে। মামলাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো কোতয়ালী থানার মামলা নম্বর ৪৪ তারিখ ২৭/১০/২০১৯, মামলা নম্বর ১১০ তারিখ ২৯/০৯/২০১৯, মামলা নম্বর ৯৫ তারিখ ১৯/০৮/২০১৭, মামলা নম্বর ১১৩ তারিখ ২৬/০৮/২০১৯, মামলা নম্বর ৪৮ তারিখ ০৮/০৪/২০১২, মামলা নম্বর ১২২ তারিখ ২২/০৬/২০০৬, মামলা নম্বর-৬০ তারিখ ১৬/০৪/২০০৬, মামলা নম্বর-০৩ তারিখ ১৪/০৪/২০০৬, মামলা নম্বর-১৮ তারিখ ০৫/০৪/২০০৬, মামলা নম্বর ১১১, তারিখ ০৫/০৪/২০০৫।
পুলিশ সুত্রে আরও জানা যায়, তিনটি মামলায় আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। যার নম্বর যথাক্রমে এসটিসি-২৬৩/১৫, এসটিসি-২২৫/১৬, এসটিসি-২৪৮/১৭। ২০১৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে শহরের পুরাতন কসবা কাজীপাড়া এলাকার যুবলীগ কর্মী শরিফুল ইসলাম সোহাগকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এই হত্যাকান্ডের মূলপরিকল্পনাকারী জাহিদ হোসেন মিলন ওরফে টাক মিলন। এই মামলায় আটক এক আসামির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে টাক মিলনের নাম এসেছে। এই মামলারও সন্দেহভাজন আসামি তিনি।
এছাড়াও ২০১৯ সালের ২৭ জানুয়ারি রাতে যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের বাড়িতে বোমা হামলার ঘটনায় জড়িত টাক মিলন। তার নেতৃত্বেই এই হামলা চালানো হয়েছিল বলে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। এই দুটি মামলায় আদালতে রিমান্ড আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানান, জাহিদ হোসেন মিলন ওরফে টাক মিলন যশোর শহরের পালবাড়ি এলাকার ত্রাস হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে ইজিবাইক, ট্রাকে ব্যাপক চাঁদাবাজি, এলাকার মানুষের কাছে চাঁদাবাজিতে জিম্মি হয়ে পড়ে এলাকাবাসী। এছাড়াও পালবাড়ির রয়েল কমিউনিটি সেন্টারে দীর্ঘদিন ক্যাসিনো (জুয়া) ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন। সারাদেশে ক্যাসিনোবিরোধী ও শুদ্ধি অভিযান শুরু হলে গা ঢাকা দেয় টাক মিলন। পুলিশ একাধিকার অভিযান চালালেও তাকে ধরতে ব্যর্থ হয়। তিনি এক প্রভাবশালী নেতার গাড়ি ও বাড়িতে থাকতেন এবং বাইরে বের হতেন না। সর্বশেষ তিনি স্ত্রী সন্তান নিয়ে দুবাইয়ে আত্মগোপন করেছিলেন। সেখান থেকে মাঝে মাঝে দেশে আসতেন। এই তথ্য পুলিশের কাছে আসলে ইমিগ্রেশন পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করা হয়।

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here

Pages