ভ্যাট-ট্যাক্স ফাঁকিবাজদের শান্তিতে ঘুমাতে দেওয়া হবে না - Meghna News 24bd

সর্বশেষ


Sunday, February 16, 2020

ভ্যাট-ট্যাক্স ফাঁকিবাজদের শান্তিতে ঘুমাতে দেওয়া হবে না

  image



অনলাইন ডেস্ক: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, আজ যারা ব্যাংক থেকে জাল-জালিয়াতি করে অবৈধভাবে ঋণ নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছেন। কর ফাঁকি দিয়ে জনগণের অর্থ আত্মসাৎ করছেন। আমরা আমাদের সাধ্য অনুযায়ী তাদের তাড়া করছি। শান্তিতে তাদের ঘুমাতে দিব না। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিসিএস কর একাডেমি মিলনায়তনে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তারা ‘আয়কর আইন ও বিধানাবলী’ সংক্রান্ত বিশেষ প্রশিক্ষণ কোর্স উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, আয়কর বা যে কোন করই জনগণের অর্থ। যারা সরকারের এই পাওনা পরিশোধ করেন না । এই পাওনা আসলে-জনগণের অর্থ। পরিশোধ না করা আর্থিক আত্মসাতের শামিল বলে অনেকেই মনে করেন। কীভাবে তারা সরকারি পাওনা না দিয়ে, দম্ভভরে সমাজে মাথা উঁচু করার সাহস পায়। সমাজে চলাচল করে তা আমার বোধগম্য নয়। এই আত্মসাৎ নিয়ন্ত্রণ করা দুদকের আইনি ম্যান্ডেট। দুদক কখনও তার ম্যান্ডেটের বাইরে গিয়ে কোন কাজ করে না, করবেও না। আমরা সবাই একত্রে দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে কাজ করতে চাই। কীভাবে আয়কর না দিয়ে অবৈধ টাকা ঘরে রাখার সাহস পায়। আয়কর বিভাগের সন্দেহ হলে এসব ক্ষেত্রে সার্চ করতে পারে কী না তা আমাদের জানা নেই । তবে এটা আইনে থাকা উচিত।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, গভীর রাতে এই রাজধানীতে যাদের ছেলেমেয়েরা বিলাসবহুল গাড়ি চালাচ্ছেন, শত কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ নিয়ে পালিয়েছেন। অথচ তাদের অনেকের আয়কর রিটার্নই নেই। এটা কীভাবে সম্ভব? আমরা এটা বন্ধ করতে চাই। এটা চলতে পারে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও খুবই হতাশাজনক। বাংলাদেশের মানুষ ১৬ কোটি। আমরা জেনেছি, আয়কর রিটার্ন জমা দেন ২০ লাখ আর আয়কর প্রদান করেন মাত্র ১২ লাখ। এটা লজ্জার বিষয়। আমার বিশ^াস যে সব সম্মানীত নাগরিকগণের জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে। তাদের প্রত্যেকেরই ট্যাক্স রিটার্ন থাকা বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত। এতে প্রতিটি নাগরিক নিজেকে দেশের মালিক ভাবতে পারবেন। আর ট্যাক্স রিটার্ন থাকলেই আয়কর দিতে হবে বিষয়টি কিন্তু তেমন নয়। যার আয়করযোগ্য আয় নেই তাকে কোন আয়কর পরিশোধ করতে হবে না। তবে ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিতে হবে। আমরা চাই আয়কর না বাড়িয়ে ট্যাক্সনেট বাড়ানো হোক। এতে প্রতিটি নাগরিকের সম্পত্তির একটি সঠিক হিসাবের ভিত্তিও পাওয়া যেতে পারে। অবৈধ সম্পদ অর্জনের পথও সঙ্কুচিত হয়। অনুপার্জিত আয় ভোগ করার প্রবণতা কমে আসবে। দুদকের তদন্ত ও অনুসন্ধানও কিছুটা সহজ হবে।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশে বৈধ/অবৈধভাবে অনেক বিদেশিরা কাজ করছেন। তাদের অনেকেই আয়কর ফাঁকি দিচ্ছেন এবং অবৈধভাবে এই অর্থ পাচারও করছেন বলেও প্রায়ই অভিযোগ পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে আয়কর বিভাগ, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ, ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে সমন্বিতভাবে এদের চিহ্নিত করে আয়কর আদায় করতে পারে। যারা এভাবে আয়কর ফাঁকি দিয়েছেন তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারে। তিনি বলেন, দেশের অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভ্যাট আদায় করা হলেও সঠিকভাবে সরকারি খাতে জমা হয় না মর্মে প্রায়ই কমিশনে অভিযোগ আসে। ভ্যাট সংগ্রহের ক্ষেত্রে পাওয়া কিছু অভিযোগের কথা উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, অনেক সময় বিক্রেতা বলেন, ভ্যাটসহ বিল এত টাকা, আর ভ্যাট না দিলে এত টাকা। এটা কীভাবে সম্ভব। মনে হয় এক্ষেত্রে ভ্যাট প্রশাসনের দায়িত্বে কিছুটা শিথিলতা রয়েছে। আমরা কখনও কখনও শুনি কোন কোন প্রতিষ্ঠানে ভ্যাট আদায়ের ইনফরমাল রসিদ ব্যবহার করে মাসিক ভিত্তিতে তা সংরক্ষণ করা হয়। এটা কিন্তু ভ্যাট আইনের পরিপন্থী বলে মনে হয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কর প্রশাসন) আরিফা শাহানার সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কর নীতি) মো. আলমগীর হোসেন, দুদকের মহাপরিচালক (প্রশিক্ষণ ও আইসিটি) একেএম সোহেল, বিসিএস কর একাডেমির মহাপরিচালক লুৎফুল আজিম প্রমুখ।

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here

Pages