এস কে দোয়েল : সময়ের অন্তরালে নারী নির্যাতনের মতো পুরুষও নির্যাতিত হচ্ছে তাদের ‘স্ত্রী’ অর্ধাঙ্গিন সঙ্গীর কাছ থেকে। তবে এ নির্যাতন দেখা যায় না। কোট-কাচারি আর থানায় নারী নির্যাতনের মতো ভুরি ভুরি অভিযোগ দায়ের হয় না। কেন হয়না ? ছোট্ট একটা প্রশ্ন থাকলেও জমাটবাধা পুরুষের চক্ষুলজ্জা, সংসার টিকিয়ে রাখা, আত্ন-সম্মানবোধ বজায় রাখতেই অদেখায় থেকে যায় পুরুষের অপ্রকাশিত নির্যাতনের আর্তনাত।
সম্প্রতি দাম্পত্যের কলহের কারণে রাজধানী ঢাকায় এক ‘পুলিশ সদস্যের আত্মহত্যা’র ঘটনা ফোকাসে এসেছে। আত্মহত্যার ঘটনাটি ফেসবুকে ভাইরাল হলে বিষয়টি সবার নজরে আসে। পর্দার আড়ালে পুরুষরা আজ অবলা নারীর কাছ থেকে কিভাবে নির্যাতিত হচ্ছে। রাজধানীর মিরপুর পুলিশলাইনের আব্দুল কুদ্দুস নামে পুলিশ সদস্য মৃত্যুর আগে ফেসবুকে তার টাইমলাইলে আবেগঘন স্টেটাস দিয়েছিলেন। মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী না করলেও ইংগিত টেনেছেন তার স্ত্রী ও শ্বাশুড়ীকে নিয়ে।
লিখেছিলেন ‘আমার মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করব না। ভেতরের যন্ত্রণাগুলো বড় হয়ে গেছে, আমি আর সহ্য করতে পারছি না। প্রাণটা পালাই পালাই করছেৃ।’ মানুষ যে সহজে আত্মহত্যা করে না, আত্মহত্যার পিছনে কোন না কোন কারণ থাকে। দীর্ঘদিন ধরে চেপে রাখা কষ্ট, না বলার যন্ত্রণা। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও আতœহত্যার ঘটনা ঘটছে। কারণগুলো হচ্ছে দাম্পত্য কলহ, পরকীয়া ঘটনায়। আজকের পরকীয়া প্রেমের মহামারী ধারণ করেছে পশ্চিমা সংস্কৃতি আর ভারতীয় স্টার জলসা, জি বাংলা সিরিয়াল নাটকের হাত ধরে।
পুলিশের ওই সদস্যের নাম শাহ আব্দুল কদ্দুস। আত্মহত্যার জন্য কাউকেই দায়ী না করলেও অবিবাহিত তরুণদের কাছে রেখে গেছেন এক সতর্কবার্তা। লিখলেন, ‘অবিবাহিতদের প্রতি আমার আকুল আবেদন আপনারা পাত্রী পছন্দ করার আগে পাত্রীর মা ভালো কিনা তা আগে খবর নেবেন। কারণ পাত্রীর মা ভালো না হলে পাত্রী কখনই ভালো হবে না। ফলে আপনার সংসারটা হবে দোজখের মতো।’ কী পরিমাণ কষ্ট পেলে আত্মহত্যার পূর্বে এ কথা লেখা হয় তা সহজেই অনুমেয়। তাঁর এ অনাকাংখিত মৃত্যু চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে দিচ্ছে, কী নির্মমতা তৈরি হয়েছে পুরুষদের জীবনে।