মোঃ উজ্জ্বল : মহামারী করোনা ভাইরাসের কারনে দেশে চলছে ক্লান্তিলগ্ন। এই দূর্যোগে দেশ ৫ টি পরিবর্তনের সম্মুখীন হচ্ছে।
১.দৈনন্দিন জীবনে পরিবর্তন।
লকডাউনের কারণে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত শিশু কিশোররা,বন্ধ রয়েছে স্কুল কলেজ। অনেক শিশু এমন ও রয়েছে বাড়িতে থাকতে থাকতে তারা বিরক্তিকর ও হাপিয়ে যাচ্ছে।
অধিকাংশ পরিবার বলছে,তাদের ছোট্ট সন্তানটি প্রত্যেক দিন মা বাবা কে বলছে কোন দিন স্কুল খুলবে।
অনেকই অফিসের কাজ বাসায় বসে করতে হচ্ছে।
তবে জীবন যাত্রার পরিবর্তনটি আরো প্রকট হচ্ছে যখন ভাইরাসের সংক্রমণ দমনে সর্তকতামূলক পদক্ষেপ গুলো নেয়া হচ্ছে।
২.পরিবেশগত পরিবর্তন।
বিশ্বের অনেক দপশেই লক ডাউনের কারণে মানুষ ঘরে অবস্থান করছে এবং কলকারখানা বন্ধ থাকায় কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণের মাত্রা কমে গেছে। স্যাটালাইট ইমেজেও দেখানো হয়েছিল যে,চীনে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণের মাত্রা উল্লেখযোগ্য হার কমে গেছে।
নগর পরিকল্পনাবিদ ও প্রকৌশলী ইকবাল হাবিব বলেন,পরিবেশ পরিবর্তনের কথা যদি বলতে হয় তাহলে বলতে হবে যে বায়ুদূষণ নগরীতে অস্বাভাবিক ভাবে কমেছে।
সমুদ্রের কিনারা গুলোতে ডলফিন লুকোচুরি করছে।
খেয়াল করলে দেখবেন, নগর জুড়ে পাখি এবং প্রজাপতি যেন ফিরে এসেছে।শব্দ দূষণের হাত থেকে সমস্ত শহর বিরাট পরিত্রান পেয়েছে।
৩. অর্থনীতির পরিবর্তন।
লকডাউনের কারণে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বন্ধ থাকায় কী পরিমান ক্ষতি হয়েছে, এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড.সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন,
একটি দেশের অর্থনীতির তিনটি খাত রয়েছে।কৃষি,শিল্প ও সেবা।
তারা গবেষনা করে দেখেছেন তা হলো লকডাউনের কারণে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বন্ধ থাকায় প্রতিদিন ৩ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা ক্ষতি হয়।
৪.ধর্মীয় পরিবর্তন।
করোনা মহামারীর কারনে সকল ধর্মীয় উৎস,আচার আচরণ বন্ধ ও একত্রে সমাবেশ করতে পারছে না।
মসজিদে জামায়াতে নামাজ আদায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।এমন কি রমজান মাসের তারাবি ও পড়তে পারছে না।
এ বিষয়ে আশুলিয়ার কেন্দীয় মসজিদের ইমাম বলেন,এখন আর মানুষ জামায়াতে নামাজ পড়তে আসেনা।
৫.রেমিট্যান্স এর ধাক্কার পরিবর্তন।
প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ দেশের অনেকটা উন্নতির অবদান রাখে।
স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল হামিদ বলেন,মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে সারা বিশ্ব যেহুতু অচল হয়ে পড়েছে তাই পরিস্থিতি যত দিন স্বাভাবিক না হবে তত দিন প্রবাসীদের আয় স্বাভাবিক হবে না।
তিনি বলেন,রেমিট্যান্স এর ক্ষেত্রে আমরা একটা বড় ধাক্কা খেতে যাচ্ছি।
রেমিট্যান্স কমে যাওয়ায় এই ধাক্কা কত বড় হবে তা নির্ভর করবে সেসব দেশে বাংলাদেশি জনশক্তির রয়েছে সে সব দেশে অর্থনীতি কত এ দ্রুত স্বাভাবিক হয় তার উপর।
তিনি আরো বলেন,প্রতিষেধক আবিষ্কার না হলে কোন দেশেই আর নতুন করে জনশক্তি নিতে চাইবে না কারণ তারা চাইবে না যে জনশক্তি সাথে ভাইরাসটি তাদের দেশের নতুন করে ছড়িয়ে পড়ুক।