নীলফামারী প্রতিনিধি : নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ঈদগাহ ময়দানকে নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য বালু দিয়ে বাধ নির্মানকে কেন্দ্র করে পুলিশ-গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার বেলা ১২ টার দিকে উপজেলার পুটিমারী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের হাটখোলা গ্রামে ঘটনাটি ঘটে । এ ঘটনায় উপজেলা হাসপাতালে আহত ওসি (তদন্ত) ও এক দম্পক্তিকে ভর্তি করা হয়েছে। তবে পরে ওসি (তদন্ত) মোঃ মফিজুল হককে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
এলাকাবাসী জানায় গ্রামের পাশ দিয়ে যাওয়া চারালকাটা নদী খননে গ্রামের ঈদগাহ ময়দানটি ভাঙ্গনের কবলে পড়ে। ফলে গ্রামবাসী স্বেচ্ছায় ঈদগাহ ময়দান রক্ষার্থে বালির বাধ নির্মানের কাজ শুরু করে। এ অবস্থায় ওই গ্রামের মৃত ঈসা উদ্দিনের ছেলে তছলিম উদ্দিন ঈদগাহ ময়দানের জায়গা নিজের দাবি করে গ্রামবাসীকে বালির বাধ নির্মানে বাধা দিলে ২১ এপ্রিল গ্রামের আলমগীর হোসেন সহ চারজনকে মারধর করা হয়। আহতরা হাসপাতালে ভর্তি হয়।
এ ঘটনার পরদিন ২২ এপ্রিল তছলিম উদ্দিন সহ তার বাহিনীর বিরুদ্ধে আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন (মামলা নম্বর ৭)। অপর দিকে তছলিম উদ্দিনও পাল্টা মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, তারা সোমবার সকালে যখন পুনরায় ঈদগাহ ময়দানের সামনে সেচ্ছায় বালির বাধের কাজ করছিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ঘটনাস্থলে এসেই তাদেরকে লাঠি পেটা করতে থাকে। প্রতিবাদ করতে গেলে গ্রামের ইলিয়াছ হোসেনকে(৪৫) পানিতে ফেলে মারপিট ও পানির নিচে পা দিয়ে চেপে ধরেন ওই তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুল ওহাব। স্বামীকে উদ্ধার করতে ছুটে গেলে ইলিয়াছ হোসেনের স্ত্রী তহমিনা বেগমকেও (৩৫) ওই এসআই লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকে। গ্রামবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে ওই এসআইকে ধাওয়া করলে তিনি দৌড়ে পালাতে থাকেন। খবর পেয়ে কিশোরীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মফিজুল হকের নেতৃত্বে এক দল পুলিশ এসে গ্রামবাসীর উপর লাঠিচার্জ করতে গেলে গ্রামবাসী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ অবস্থায় পুলিশের দলটি একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয়। এরপর ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বারী। তার সহায়তায় উপজেলা হাসপাতাল হতে এ্যাম্বুলেন্স এনে আহত ওসি(তদন্ত) ও আহত দম্পতিকে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করান। এখান থেকে আহত ওসি (তদন্ত)কে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
এ সময় গ্রামবাসী দোষী পুলিশ সদস্যদের বিচার ও অপসারন দাবি করে বিক্ষোভ করতে থাকে। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সৈয়দপুর সার্কেল) অশোক কুমার পাল। তিনি তদন্তের মাধ্যমে দোষী পুলিশ সদস্যেদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বারী জানান, থানার এসআই আব্দুল ওহাবের কারনে আজ এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।