
সংগৃহীত ছবি
ফরিদপুর প্রতিনিধি : করোনা সন্দেহে সারাদিন এগিয়ে এলেন না কেউ, অবশেষে রাস্তার ধারেই মরে পড়ে থাকলেন জ্বরে আক্রান্ত দিনমজুর।
খবর পেয়ে প্রশাসনের লোকরা শেষ পর্যন্ত তাকে উদ্ধার করে গভীর রাতে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলেও তার আগেই তার মৃত্যু হয়।
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার এ ঘটনায় নিহত ওই ব্যক্তির নাম আবদুস সামাদ মন্ডল(৪৮)। তার বাড়ি যশোরের খাজুরা এলাকায় বলে জানা গেছে।
শনিবার (১১ এপ্রিল) সকালে আবদুস সামাদের মরদেহ ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লাশঘরে রাখা ছিলো। তার দাফনের জন্য এখনও কোনও স্বজনের সন্ধান মিলেনি।
মধুখালী উপজেলার কামারখালী বাজারের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী জানান, আবদুস সামাদ মণ্ডল কামারখালীতে এসেছিলেন দিনমুজুরের কাজ করতে। জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি একটি ভ্যানযোগে হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। তবে পথিমধ্যে ফরিদপুর-খুলনা মহাসড়কের মাঝিবাড়িতে একটি জুট মিলের সামনে তাকে রাস্তার পাশে একটি গর্তের ধারে ফেলে রেখে যায় ওই ভ্যানচালক।
এভাবে সারাদিন ওই গর্তের ধারেই পরে ছিল মুমূর্ষ আবদুস সামাদ। ওই পথ দিয়ে অনেকেই যাতায়াত করলেও কেউ তার সাহায্যে এগিয়ে আসেনি করোনা আক্রান্ত সন্দেহে। খবর পেয়ে সন্ধার দিকে সেখান যান মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানা পুলিশ।
মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তফা মানোয়ার জানান, অসুস্থ ওই ব্যক্তি জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন বলে তাকে হাসপাতালে নেয়ার জন্য একটি অ্যাম্বেুলেন্স চেয়ে পাঠাই। তবে ফরিদপুর থেকে ওই অ্যাম্বুলেন্স আসতে অনেক রাত হয়ে যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রেজা বলেন, জ্বরে আক্রান্ত আব্দুস সামাদকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সে নেয়ার সুযোগ ছিল না সতর্কতার কারণে। তাহলে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স ১৪ দিন সাধারণ রোগী বহন করতে পারতো না।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ জুয়েল জানান, রাত পৌনে ১১টার দিকে ওই রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে হাসপাতালে আনার পর পরীক্ষা করে মৃত পাওয়া যায়।
ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ওই রোগীটি করোনা সন্দেহে কেউ তাকে উদ্ধারে এগিয়ে আসেনি বলে জেনেছি। তবে এব্যাপারে তিনি বিস্তারিত কিছু জানেন না বলে জানান।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুর রহমান জানান, রাতেই আমরা ওই মৃত ব্যক্তির শরীরের বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করি। আজ সকালে এসব নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে