বন্দুকযুদ্ধের গল্প সাজান এসপি এ বি এম মাসুদ হোসেন - Meghna News 24bd

সর্বশেষ


Saturday, August 8, 2020

বন্দুকযুদ্ধের গল্প সাজান এসপি এ বি এম মাসুদ হোসেন

নিহত মেজর সিনহা
অনলাইন ডেস্ক : সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে গুলি করে হত্যার পর বন্দুকযুদ্ধের গল্প সাজিয়ে দিয়েছিলেন কক্সবাজার জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) এ বি এম মাসুদ হোসেন। আর টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশের নির্দেশেই সিনহাকে গুলি করেন তৎকালীন বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী। এসপি-ওসি-পরিদর্শকের ফোনালাপে এমন তথ্য উঠে এসেছে। তাদের ফোনালাপের কয়েকটি রেকর্ড গণমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে এ সম্পর্কিত নির্দেশনা গ্রহণ ও নিশ্চয়তা প্রদানই ছিল ফোনালাপের মূল বিষয়বস্তু।
নিহত মেজর সিনহা

৩১ জুলাই রাত ৯টা ৩০ মিনিটে তত্কালীন বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী তার ব্যক্তিগত মোবাইল থেকে তত্কালীন টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপের অফিশিয়াল নম্বরে ফোন করেন। ৩ মিনিট কথা বলেন তারা। এরপর ৯টা ৩৩ মিনিটে মালখানার ইনচার্জ কনস্টেবল আরিফের ব্যক্তিগত নম্বরে ফোন করেন। তার সঙ্গে ১ মিনিট কথা বলেন। এরপর ৯টা ৩৪ মিনিটে কক্সবাজারের পুলিশ সুপারের ব্যক্তিগত নম্বরে ফোন করেন লিয়াকত। সেখানে তাদের কথা হয় ৩ মিনিট। কথোপকথনে লিয়াকত ঘটনা সম্পর্কে এসপিকে জানান। কিন্তু সেখানে মাদক ও অস্ত্র পাওয়ার কোনো কথা উল্লেখ করেননি। ওসি প্রদীপ কুমার দাসের সঙ্গেও কথা হয় এসপি এ বি এম মাসুদ হোসেনের। তাদের কথোপকথন হুবহু তুলে ধরা হলো—

প্রদীপ : আদাব স্যার। 
মাসুদ : কী আপনি, এমন কী হইছে বলেন। 
প্রদীপ : স্যার লিয়াকত গুলি করছে নাকি স্যার, আমি যাচ্ছি ওখানে। 
মাসুদ : কে? 
প্রদীপ : ঐ যে স্যার লিয়াকত। স্যার ইয়াতে, চেকপোস্টে একটা গাড়িকে সিগন্যাল দিছে, সিগন্যাল দেওয়ার পর গাড়ি থেকে তাকে পিস্তল দিয়ে গুলি করছে। ঐ সময় আমি তাকে বললাম, তুমিও তাড়াতাড়ি ওকে গুলি করো। সেও নাকি তাকে গুলি করছে স্যার। আমি যাচ্ছি স্যার, ওখানে স্যার। 
মাসুদ : যান, যান।

যদিও ওসির বক্তব্যের সঙ্গে মিল নেই লিয়াকতের। লিয়াকত বলেন, মেজর সিনহা পিস্তল তাক করায় তিনি তাকে গুলি করেন। এসপির সঙ্গে লিয়াকতের কথোপকথন হুবহু তুলে ধরা হলো—লিয়াকত : আসসালামু আলাইকুম স্যার, স্যার। মাসুদ : বলো। লিয়াকত : এখানে একটা প্রাইভেটকার আসে স্যার, ঢাকা মেট্রো লেখা। আর্মির পোশাক টোশাক পরা। সে ঐ বোরখা খুলে ফেলছে। পরে যখন তাকে চার্জ করছি সে মেজর পরিচয় দিয়ে গাড়িতে চলে যেতে চাইছিল। পরে অস্ত্র তাক করছিল। আমি গুলি করছি স্যার। এক জন ডাউন করছি। আরেক জনকে ধরে ফেলছি স্যার। স্যার, আমি কী করব স্যার। আমাকে পিস্তল তাক করছে, পিস্তল পাইছি তো স্যার। মাসুদ : আচ্ছা ঠিক আছে। তোমাকে গুলি করছে, তোমার গায়ে লাগে নাই। তুই যেইটা করছ সেটা তার লাগছে। লিয়াকত : লাগছে স্যার, লাগছে স্যার। মাসুদ : হ্যাঁ।

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ঘটনাটি তদন্ত হচ্ছে। ঘটনায় এসপির সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে। জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী কাউকেই ছাড় দিবেন না। শুক্রবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে নিজ বাসায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত কমিটির সদস্যরা কাজ শুরু করেছেন। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তারা তদন্ত প্রতিবেদন আমাদের কাছে জমা দেবেন। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পরই এ মামলার জট খুলে যাবে।

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here

Pages