কে এম হামিদ রঞ্জু : ছাত্র ইউনিয়নের(ইপসু)
সেই আধিপত্যের সময় সাভারের গেন্ডা গ্রামের কৃতি সন্তান জনাব মুজাহিদিল
ইসলাম সেলিম ঢাকা থেকে এসে আমাকে ও আরও কিছু
ছেলেকে ফাতেমা জিন্নাহর
পক্ষে কাজ করতে বলেন এবং কিছু লিফট ও বি,ডি,মেম্বার দের পদত্যাগ করবার জন্য কিছু নির্ধারিত ফর্ম দিয়ে যান।আমি ও ইমান্দিপুরের কাদের সেগুলো নিয়ে বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের দ্বারেদ্বারে যাই ও পদত্যাগ করার অনুরোধ জানাই অন্যথায় আইয়ুব খানকে যেন ভোট না দেন।আমাদের অনুরোধে সারা দিয়ে একমাত্র
বিরুলিয়া ইউনিয়ন কাউন্সিলের মেম্বার একলাল
উদ্দিন পদত্যাগ করেছিলেন
চাপের মুখে। তখনও সাভারে
ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগ বা অন্য কোন রাজনৈতিক দলের
কার্যকরী কোন কমিটি বা সংগঠন ছিল না। ১৯৬৩ র নির্বাচনে আইয়ুব খান বি ডি
মেম্বার দের সাথে প্রতারনা করে, প্রতিটি মেম্বারকে সে
৫০ টাকার বিনিময়ে কিনে নেন ;পরে ঐ ৫০টাকার নোট
বাজারে চলেনি জাল নোট বলে।যাই হোক ঐ বি ডি মেম্বারদের ভোটে(জনগণের
ভোটে নয়)প্রাদেশিক পরিষদে
নির্বাচিত হন ধামরাই থেকে
আমদানি করা আজগর হোসেন(উকিল)।সম্ভবত ১৯৬৪/৬৫ দিকে আজগর হোসেনের ছেলেরা)১) জাহাঙ্গীর, ২) আলমগীর
আরও পরে ৩)ফিরোজ কবীর
সাভার অধর চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যায়নের সময় এন,এস,এফের পান্ডা ছিল।
আশ্চর্যের বিষয় বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এরাই
আবার আওয়ামী লীগের হয়ে
গেলেন।ঐ সময় জাতীয় রাজনীতিতে সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তিরা ছিলেন যথাক্রমে মৌলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীন্যাপ আতাউর রহমান খান আওয়ামী লীগ ও মোজাফ্ফর আহমদ ন্যাপ বিভক্ত।১৯৬৪ সালে তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তানে ভারত থেকে আগত রিফিউজিরা এক সাম্প্রদায়িক
দাঙ্গা বাঁধেয়ে দেয় তাতে আমাদের দেশের কিছু বাঙালী যোগ দেয় সেই সময়
বিতর্কিত ভাবেই সাভারে উঠে
আসে দেওয়ান মোঃ ইদ্রিস।
তিনি তখন ন্যাপ (মুজাফফর)
এর সক্রিয় কর্মী ছিলেন।
সাভারের রাজনীতির উল্লেখযোগ্য ইতিহাস (পর্ব-৭)
আগেই উল্লেখ করেছি
সাভারে শিক্ষা,সাংস্কৃতিক ও
রাজনীতির দিক দিয়ে পিছিয়ে, যদিও আশেপাশের
এলাকায় কোন উচ্চ বিদ্যালয়
না থাকলেও ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে
সাভারের জমিদার বাবু রাখালচন্দ্র সাহা সুরম্য অট্টালিকাসম একটি সয়ংসম্পূর্ন ইস্কুল নির্মাণ করে
যান।ষাটের দশকে সাভারে প্রথম ডক্টরেট ডিগ্রী অর্জন
করেন পাথালিয়া ইউনিয়নের
ড.লুৎফর রহমান কাকতালীয়
ভাবে একই ইউনিয়নের চাকল
গ্রামের অধ্যাপক ড.আতাউর রহমান সাহেব সাভারের দ্বিতীয় ব্যক্তি যিনি ডক্টরেট ডিগ্রী অর্জন করেন।এই শিক্ষার দিকে অনগ্রসরতাই
সাভারে রাজনীতিতে পিছিয়ে
পরা।যাক সে কথা ১৯৬৩র
নির্বাচনে প্রার্থী বা ভোটার কেনা বেচারা যে সংস্কৃতি চালু
হয় বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার
পরও তা অব্যাহত থাকে বর্তমানে ২০২০ পর্যন্ত তা চরম
পর্যায়ে উন্নতি হয়েছে।১৯৬৩
সালেই গেন্ডারিয়া কৃতি সন্তান
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমই
সাভারে প্রথম ছাত্র রাজনীতি
চালু করেন।১৯৬৪ সালে বিতর্কিত ভাবে উঠে আসা
দেওয়ান মোঃ ইদ্রিস
সীমিত পরিসরে রাজনৈতিক
কর্মকান্ড চালান।একথা অস্বীকার করার উপায় নাই যে সে যে দলের হোক একজন সক্রিয় রাজনীতিক
ছিলেন।আমি নিজেও তার সাথে প্রতিপক্ষ হয়ে রাজনীতি
করেছি।আমার কথার প্রমান
মেলে মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক
জনাব তাজউদ্দীন আহমেদ সাহেবের ডায়েরিতে বহুবার
দে:মো: ইদ্রিস সাহেবর নাম পাওয়া যায়। কিন্তু আমি তাকে
কখনোই আওয়ামী লীগের
রাজনীতি করতে দেখিনি।১৯৬৬/৬৭ সালের দিকে তিনি
প্রকাশ্যে ন্যাশনাল আওয়ামী
পার্টি( ন্যাপ) মুজাফফর করতেন।কিন্তু তার পার্টিরও
কোন কার্যকরী কমিটি সাভারে ছিল না বা সক্রিয় কোন আন্দোলনের সাথে জড়িত দেখিনি।ঐ সময় সামান্য কদিনের জন্য ডেপুটি
স্পিকার নির্বাচিত হন মুসলিম
লীগের আমদানিকৃত জনাব
আসগর হোসেন তখন আমি
একবার দেখেছি সাভার ইস্কুল
প্রাঙ্গনে জনসভা করতে।ঐ
সময়ই তার তিন ছেলেই
আইয়ুব/ মুনায়েম বা মুসলিম লীগের সন্ত্রাসী ছাত্র সংগঠনের সাভার এলাকার
এন এস এফ এর পান্ডা ছিল।
(চলবে)