অনলাইন ডেস্ক : ১৯৭৩ সালে সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে ভগীরথের স্ত্রী পরিস্কার বাড়ৈর মৃত্যুবরণ করে। তিন দিন বয়সী ওই কন্যাশিশুকে বাঁচাতে চিন্তায় পড়েন ভগীরথের পরিবার। তারা একপর্যায়ে পার্শ্ববর্তী গ্রামের সতীশ বাড়ৈর স্ত্রী স্নেহলতা বাড়ৈর সহযোগীতায় বেতকাছিয়া গ্রামের লিও মধু ও কামিনী মধু মেয়েটিকে দত্তক নেয়। কিন্তু লিও মধু ওই কন্যা সন্তানকে যশোরের পলেন সরকার নামে তার এক নিঃসন্তান আত্মীয়েরর কাছে দিয়ে দেন। প্রখ্যাত সংগীত পরিচালক পলেন সরকার ও তার স্ত্রী এঞ্জেলা সরকারের কছেই বড় হতে থাকে মেয়েটি। বেদনা নিয়ে জন্মগ্রহণ করা শিশুটির নামও রাখা হয় বেদনা সরকার।
বেদনার শৈশবকাল যশোরেই কেটেছে। পরবর্তীতে পলেন সরকার সপরিবারে ঢাকার মহাখালীতে বসবাস করেন। সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বেদনা সরকার ১৯৮৮ সালে বরিশালের স্বপন মালাকারের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। এই দম্পতির সংসারে লিপিকা মালাকার ও লিখন মালাকার নামে দুই সন্তান রয়েছে।
এদিকে বেদনার বিয়ের ৩০ বছর পরে সে জানতে পারে পলেন সরকার তার আসল পিতা নয়, ছোট অবস্থায় তাকে দত্তক নিয়েছিল। এই কথা শোনার পরে তার পালক মাতার ভাইয়ের কাছ থেকে জানতে পারেন তার জন্মস্থান গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায়। এরপর থেকেই বেদনা পিতাকে খুজঁতে শুরু করেন।
প্রথমে তিনি কোটালীপাড়া উপজেলার নারিকেল বাড়ী মিশনে এসে স্থানীয়দের কাছে জানতে পারে তাকে দত্তক নেয়া লিও মধুর বাড়ি বেতকাছিয়া গ্রামে। তখন স্থানীয় প্রাণ জুড়ান বাড়ৈ-র সন্তান মনোহর এন্ড স্বরজিনী ট্রাষ্টের পরিচালক পাষ্টর মিখায়েল বাড়ৈর সহযোগীতায় লিও মধুর বাড়িতে পৌঁছান। সেখানে গিয়ে মিখায়েল বাড়ৈর মাধ্যমে তার জন্মদাতা পিতা ভগীরথ মধুর সন্ধান পান।
২ আগস্ট নিজ জন্মদাতা পিতার কাছে পৌঁছান বেদনা সরকার। বেদনা সরকার লাটেংঙ্গা গ্রামে গিয়ে দীর্ঘ ৪৮ বছর পর জন্মদাতা পিতাকে চোখের সামনে দেখতে পায়। পরিচয় পাওয়ায় বাবা-মেয়ে দু’জনেই আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। একে অপরকে জড়িয়ে ধরে আনন্দের কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তারা।