অনলাইন ডেস্ক : চিত্রনায়িকা মুনমুন ও তাঁর স্বামী মীর মোশাররফ হোসেনের বিচ্ছেদ হয়ে গেছে!
দশ বছর আগে প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন তারা। বেশ সুখী দম্পতি হিসেবেই তাদের নাম শোনা যেত। নানা অনুষ্ঠানে স্বামীকে নিয়ে আসতেন তিনি। দুটি সন্তানও রয়েছে এ দম্পতির। বোঝা যেত সংসারের প্রতি বেশ মনযোগী চিত্রনায়িকা মুনমুন।
মডেল, অভিনেতা ও প্রযোজক মোশাররফ হোসেনের ঠিকানায় বিচ্ছেদ চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন মুনমুন। যদিও এর কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না মোশাররফ। তবে মুনমুন জানালেন বিচ্ছেদের পেছনের এক দুঃখজনক গল্প। মুনমুন বলেন, ‘তাঁর “পাগল প্রেমিক” ছবিটি নিয়েই আমাদের মধ্যে মানষিক দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। অনেক টাকা বিনিয়োগ করেও সে ছবিটি নিয়ে এগোতে পরছিল না। এদিকে লকডাউনে আমার হাত প্রায় শূণ্য হয়ে আসে। তাঁকে বলেছিলাম, ছবির চিন্তা বাদ দিয়ে ব্যবসা–বাণিজ্যের কথা ভাবতে। সে ব্যবসা নয়, সিনেমা নিয়েই থাকতে চায়। তখন আমার কাছে মনে হল আমি আর পরলাম না।’ মুনমুনের অভিযোগ, স্বামী হিসেবে সে পরিবারকে না দিত সময়, না দিত পরিবারের খরচ। সংসার চালাতে মুনমুনকে স্টেজ ও যাত্রায় নাচতে হতো। আর মোশাররফ তাঁর নিজের রোজগারের টাকা ঢালতেন সিনেমা নির্মাণের পেছনে। মুনমুন বলেন, ‘তার জন্য আমি অনেক স্যাক্রিফাইস করেছি। আসলে আমি চেয়েছি সংসারটি টিকে থাকুক। তার সুবিধার জন্য আমার নিজের একটি ফ্ল্যাট ছেড়ে দিয়েছিলাম ও স্টুডিও করবে বলে। বিভিন্নভাবে টাকা পয়সা দিতাম। কিন্তু সে কিছুই করতে পারলো না। উল্টো তার হতাশা সে আমার উপর ক্ষোভ হিসেবে প্রয়োগ করেছে। আমার উপর শারীরিক নির্যাতনও করতো সে। এটা আমি মেনে নিতে পারতাম না।
ঈদের দুদিন আগে মুনমুনের ভাইয়ের কাছ থেকে বিচ্ছেদের চিঠি পান মোশাররফ হোসেন। হঠাৎ করে এমন চিঠি পেয়ে তিনি হতবাক। আলাদা থাকলেও বিচ্ছেদের চিঠি পাবেন, এমনটা তিনি ভাবেননি। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মুনমুনের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক ছিল। আমাদের বোঝাপড়ায় কিছুটা সমস্যা ছিল, তবে সেটা বিচ্ছেদের মতো কিছু না। আমি তাঁকে যতটা সময় দিয়েছি, কোনো স্বামী তাঁর স্ত্রীকে ততটা সময় দেয় না। তারপরও আমি কেন, কীভাবে তাঁর কাছে খারাপ হলাম, জানি না।’ তাঁর দাবি, নিজের রোজগারেই তিনি সংসার চালাতেন। তিনি বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে আমি তাঁকে কোনো প্রেশার দিইনি। তাঁর স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতাম না। মাঝে মাঝে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেতে নিষেধ করতাম তাঁর নিরাপত্তার কথা ভেবেই। সর্বশেষ তাঁকে নিষেধ করেছিল, মসজিদের পাশের ওই অনুষ্ঠানটিতে যেন নাচ করতে না যায়।’ মোশাররফের সঙ্গে মিলে যায় মুনমুনের কথাও। তিনিও জানিয়েছেন, তাঁর ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতেন না মোশাররফ।
২০০৩ সালে সিলেটের এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করে যুক্তরাজ্যে চলে যান মুনমুন। ২০০৬ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়। দেশে ফিরে আবারও বিনোদন অঙ্গনে কাজ শুরু করেন তিনি। যাত্রায় অভিনয় করতে গিয়ে পরিচয় হয় মীর মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে। যাত্রার এই অভিনেতা একদিন সিনেমার হিরো হবেন, সেই প্রত্যাশা নিয়ে ২০০৯ সালে তিনি বিয়ে করেন মোশাররফকে। বিয়ের দুই বছরের মাথায় তাঁদের দূরত্ব তৈরি হতে শুরু করে। সম্প্রতি ভেঙেই গেল তাঁদের সংসার। সালমান ও যশ নামে তাঁদের দুই ছেলে আছে। তাঁদের বয়স যথাক্রমে ৮ ও ৯ বছর। দুজনই মায়ের সঙ্গে থাকে। (সূত্র: প্রথম আলো)