সাঈদুর রহমান রিমন:
ক্ষমতাসীন দলের মনোনীত জনপ্রতিনিধিদের অনেকেই দিন দিন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। কারো কারো নাম যুক্ত হয়েছে দাগী অপরাধীর তালিকাতেও। দুর্নীতি, লুটপাট, জবরদখল, চাঁদাবাজি, জুলুমবাজি, ক্ষমতার অপব্যবহার থেকে শুরু করে ধর্ষণকান্ডেও জড়িয়ে পড়ছেন তারা। স্থানীয় পর্যায়ের মাদক বাণিজ্য, দেহব্যবসার পৃষ্ঠপোষকতা দেয়াসহ ক্যাসিনোর আদলে জুয়া বাণিজ্যও পরিচালনা করছেন নেতা পদবীর জনপ্রতিনিধিরা। রাষ্ট্রের কাছে দেয়া শপথনামায় যারা জনগণের জানমাল, সুরক্ষাসহ সামাজিক শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার ব্যাপারে অঙ্গিকারাবদ্ধ, তারাই রক্ষকের ছদ্মাবরণে বেপরোয়া ভক্ষকে পরিনত হয়েছেন।
অর্থবিত্ত ক্ষমতার দাপটে অপ্রতিরোধ্য বনে যাওয়া দাপুটে জনপ্রতিনিধিদের অনেকেই ইদানিং জড়িয়ে পড়েছেন ঘৃণ্য অনৈতিক কর্মকান্ডেও। মাদক সেবন, প্রকাশ্য মাতলামি, ধর্ষণ, নারী কেলেঙ্কারীসহ নানা অসামাজিক কার্যকলাপে অহরহ জড়িত থাকছেন তারা। এতে দলীয় ভাবমূর্তি যেমন ক্ষুন্ন হচ্ছে, তেমনি বিতর্কিত হয়ে উঠছে স্থানীয় সরকারের নানা প্রতিষ্ঠানও। এসব নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় চরম অসন্তোষেরও সৃষ্টি হয়েছে। সাভার উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো: শাহাদাত হোসেন খানের উলঙ্গ ছবি ঘিরে সর্বত্র বিদঘুটে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তার নানা অনৈতিক কার্যকলাপের সময় গোপনে ধারণকৃত নগ্ন দৃশ্যাবলী মানুষের মোবাইলে মোবাইলে ছড়িয়ে মুহূর্তেই ভাইরালে পরিনত হয়। এ নিয়ে বিতর্ক আর সমালোচনার ঝড় চলাবস্থায়ই সাহাদাতকে সাভার উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদের ইয়াবা সেবনের দৃশ্য দেখে সর্বত্রই ছিঃ ছিঃ রব উঠেছে। তবু তারা চলাফেরা করে নাক উচিয়ে, বুক ফুলিয়েই। অর্থবিত্তের পাহাড় জমানো এসব নেতাদের কোনো দিকে তাকানোর ফুরসৎ নেই। গাংনী উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমীনকে তার প্রেমিকসহ হাতেনাতে আটক করে এলাকাবাসী বিয়ে পর্যন্ত পড়িয়ে দিয়েছেন। পরকীয়া প্রেমের জেরে ২০ লাখ টাকা দেনমোহরে আবারও বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন এ নারী ভাইস চেয়ারম্যান। স্বামী মৃত্যুজনিত কারণে একাকী হয়ে পড়া ফারহানা ইয়াসমীন পরকীয়ার সুবিধায় সুখ-সংসার লাভ করলেও তার অনৈতিকতায় বিতর্কিত হয়েছে দল, ক্ষুন্ন হয়েছে উপজেলা পরিষদের সম্মান।
এদিকে নরসিংদীর মাধবদী পৌর মেয়র মোশাররফ হোসেন মানিক তার এলাকায় রীতিমত জমিদারী শাসন কায়েম করেছেন। তিনি মাস্তান বাহিনীর দ্বারা যাকে খুশি ধরে বেধে নিজের আস্তানায় নিয়ে আটকে রাখেন, নানারকম নিপিড়ন নির্যাতন চালান। মেয়র মোশাররফের কাছ থেকে বাদী-বিবাদী কারো যেন রেহাই নেই। উভয় পক্ষ থেকেই চাহিদামাফিক টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়াই তার প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মেয়র মোশাররফের হাতে দলীয় নেতা কর্মিরাই সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হন, ক্ষতিগ্রস্ত হন। অতিসম্প্রতি থানা কৃষকলীগের সদস্য সচিব সুখরঞ্জন বনিক, থানা ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুদ খান অপূর্ব, শ্রমিক লীগের থানা কমিটির সভাপতি আনিসুর রহমান সোহেলসহ প্রায় এক ডজন নেতা সরাসরি মেয়র মোশাররফের বর্বর নির্যাতনের শিকার হন। এসব নেতাদের তিনি প্রকাশ্যে জনসম্মুখে প্রহার করেছেন, আহত বানিয়ে হাসপাতালে পর্যন্ত পাঠিয়েছেন।
এ নিয়ে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষকলীগসহ ক্ষমতাসীন দল ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা কর্মিদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। দলীয় নেতা কর্মিরা অভিযোগ করে জানান, মেয়রের অনৈতিক কর্মকান্ড, সন্ত্রাসী আচরণ ও লুটপাট দুর্নীতির বেশুমার অভিযোগের কারণে সাধারন মানুষের সামনে মুখ দেখানো যায় না। স্কুল কলেজের ছাত্রী থেকে শুরু করে গৃহবধূ পর্যন্ত সবাই তার ব্যাপারে ভয়ঙ্কর আতঙ্কে থাকেন। নারীঘটিত অসংখ্য কেলেঙ্কারীর সঙ্গে মেয়রের সম্পৃক্ততা নিয়ে মুখরোচক হাজারো গল্প ছড়িয়ে আছে মানুষের মুখে মুখে। তার মুখের অশ্রাব্য গালাগাল শুনলে বমির উদ্রেক হয়।
পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি পৌরসভার মেয়র গোলাম কবিরের ক্ষমতার যেন শেষ নেই। তার বিরুদ্ধে হাজারো অভিযোগের ছড়াছড়ি, কিন্তু শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সাহসও যেন কারো নেই। অজ্ঞাত ক্ষমতায় দোর্দন্ড দাপুটে গোলাম কবীরের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগসমূহ তদন্ত করতেও চরম অনীহা রয়েছে সংশ্লিষ্টদের। পিরোজপুরের জেলা প্রশাসন থেকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় এমনকি দুর্নীতি দমন কমিশনও অত্যাচারী ওই মেয়রের ব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটে থাকছে। পৌর মেয়র গোলাম কবীরের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি, লুটপাট ও স্বেচ্ছাচারিতার অন্তহীন অভিযোগ রয়েছে। তার স্বজনপ্রীতির থাবায় লুটপাট চলছে গোটা পৌর শহর জুড়েই। দুর্নীতির ক্ষেত্রেও চলছে মেয়রের নির্লজ্জ বেহায়পনা। পৌর পিতা হিসেবে পৌরসভার নানা উন্নয়ন কর্মকান্ডের টেন্ডার যেমন ঘোষণা করেন গোলাম কবীর, তেমনি নিজেই ঠিকাদার হিসেবে রীতিমত সিন্ডিকেট বানিয়ে সেসব টেন্ডার কাজ হাতিয়েও নেন প্রকাশ্যে। এতে প্রতিটি উন্নয়ন কাজে সরকারি অর্থের যথেচ্ছা অপচয় ঘটলেও কাঙ্খিত উন্নয়ন দেখতে পান না পৌরবাসী। পৌরসভার উন্নয়নমূলক কাজের বরাদ্দের টাকা অন্য ঠিকাদারদের নাম মাত্র দিয়ে মেসার্স মাহাবুব ট্রেডার্সের নামে সিংহভাগ টাকা মেয়র নিজে নিয়ে নেন।
গোলাম কবীরের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ জমা হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনেও। কিন্তু বেশিরভাগ অভিযোগের তদন্ত পর্যন্ত হয় না। সংশ্লিষ্ট অফিসগুলোতে মেয়র গোলাম কবীরের পা পড়লেই অজ্ঞাত জাদুর ছোঁয়ায় সব তদন্ত তৎপরতা বন্ধ হয়ে যায়, তদন্তকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার গড়ে উঠে গলায় গলায় পীড়িত। এসব বিষয় জানিয়ে প্রতিকার চেয়ে প্রধানমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছেও বিশেষভাবে অভিযোগ দাখিল করেন ওই এলাকার বিশিষ্ট নাগরিক সমাজ। এ্যাডভোকেট কমলকৃষ্ণ আচার্য্য. কাজী ছাইফুদ্দিন শাহারিয়ার সোহাগ, শামীম হাসান, হুমায়ুন কবির, খলিলুর রহমান, হাফিজুর রহমান, মেহেদী হাসান, শ্যামল দত্ত ও সজিব সাক্ষরিত লিখিত অভিযোগে মেয়র গোলাম কবীরের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ত্রিশটিরও বেশি অভিযোগের প্রমানাদীও দাখিল করা হয়। ইদানিং মেয়র তার বিপক্ষ জনমত দমনে অস্ত্রবাজ ক্যাডার বাহিনী গড়ে তুলেছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুধু পৌর মেয়র কিংবা উপজেলা চেয়ারম্যান পদেই নয়, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত কাউন্সিলর থেকে সংসদ সদস্য পর্যন্ত সব স্তরের জনপ্রতিনিধিরাই নানারকম অপরাধ অপকর্মে জড়িয়ে আছেন। এক শ্রেণীর সংসদ সদস্যের নৈতিক স্খলন, মূূল্যবোধের অবক্ষয়ের ফিরিস্তি বলে শেষ করার মতো নয়। এর জন্য দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে বহুলাংশে দায়ী করা যায়। রাজনৈতিক দলগুলো কালো টাকার মালিক, চোরাকারবারি, মাদককারবারি, মানবপাচারকারী, ব্যাংক ঋণ আত্মসাৎকারী, সন্ত্রাসী পরিচিতদের দলে ভেড়ায় কোনো রাখ ঢাক না রেখেই। তাদেরকেই দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিযুক্তি, জাতীয় নির্বাচনে দলীয় টিকিট দেয়া হয় ঢাকঢোল বাজিয়ে। নিবেদিত প্রাণ, ত্যাগী নেতাকর্মীদের চেয়ে দলে এদের কদর-ইজ্জত বেশি দেয়া হয়। জাতীয় সংসদের লক্ষীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য (স্বতন্ত্র) কাজী শহীদ ইসলাম পাপুলকে মানব ও মুদ্রাপাচারের সুনির্দিষ্ট অভিযোগে কুয়েত সিআইডি (ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট) গ্রেপ্তার করে ৮ দিন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কারাগারে পাঠিয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের কোনো সদস্য ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে বিদেশের মাটিতে এভাবে গ্রেপ্তার হওয়ার নজির নেই।
ময়মনসিংহ-৭ ত্রিশাল আসনের এমপি ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাফেজ মাওলানা রুহুল আমিন মাদানী এবং তার পুত্র ত্রিশাল উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান মাহমুদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্য, পুলিশে নিয়োগের নামে অর্থ আত্বসাত, অনিয়ম ও মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে মানববন্ধন হয়েছে। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নারী উন্নয়ন সংস্থা ও ময়মনসিংহের সচেতন মহলের ব্যানারে এ মানববন্ধন হয়। ওই মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ বলেন, ত্রিশালে স্কুল মাদ্রাসায় নৈশপ্রহরী ও আয়া নিয়োগে একক আধিপত্য বিস্তার করে এমপির স্বজনরা প্রত্যেকের নিকট থেকে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা নিয়েছেন। এ সংক্রান্ত সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশ হলেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। হাফেজ মাওলানা রুহুল আমিন মাদানী এমপি হওয়ার পরে তার ১০ গুণ সম্পদ বেড়েছে। সবই করেছেন দুর্নীতি, অনিয়ম, নিয়োগ বাণিজ্য ও আত্বসাত করে। তার সমুদয় টাকা হুন্ডির মাধ্যমে সৌদিআরবে পাচারেরও অভিযোগ রয়েছে। এমপি মাদানীর মেয়ে জামাতা খ্যাত জঙ্গী ইদ্রিস খানই গিলে খাচ্ছে গোটা ত্রিশালকে। সব ধরনের প্রতারণামূলক কাজ কারবারেই তার সম্পৃক্ততা রয়েছে, কুখ্যাতি অর্জন করেছে মামলাবাজ হিসেবেও। এমপি জামাতা ও ছেলের কল্যাণে ত্রিশালের সর্বত্র দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পিচ্চি সন্ত্রাসী। কিশোর গ্যাং হিসেবে চিহ্নিত এ বাহিনীর সদস্যদের মাঝে শুধু মাদক সরবরাহ দিয়েই নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। তাদের আঙ্গুলী হেলনেই দিনে রাতে যখন তখন যে কেউ ছুরিকাঘাত হচ্ছেন, আক্রান্ত হচ্ছেন অন্যভাবেও। মাদানী বিরোধীরাই এর শিকার হচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
আগে জনসেবার লক্ষ্য নিয়ে সম্ভ্রান্ত, শিক্ষিত ও সৎ মানুষ জনপ্রতিনিধি হতেন। সাধ্যমতো তারা মানুষকে সেবা দেয়ার চেষ্টা করতেন। এখন অবৈধ অর্থের মালিক, সন্ত্রাসী বা পেশিশক্তিতে বলীয়ান চরিত্রহীন ব্যক্তিরাই বেশি করে জনপ্রতিনিধি বনে যাচ্ছেন। জনপ্রতিনিধি সম্পর্কে মানুষের ধারণাই বদলে যাচ্ছে। এখন জনপ্রতিনিধিরা হেন কোনো অপরাধ নেই যার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকছেন না। ক্যাসিনো সম্পৃক্ততার অভিযোগে দুদক কর্তৃক যে ৩৪ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে সরকারদলীয় হুইপ শামসুল হক চৌধুরী, মোয়াজ্জেম হোসেন রতনসহ কয়েকজন সংসদ সদস্য, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান, তারেকুজ্জামান রাজিব, চাঁদপুরের ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সেলিমসহ ১১ জন জনপ্রতিনিধির নাম রয়েছে। এছাড়াও ব্যাংক হিসাব স্থগিত করে কমিশনের পক্ষ থেকে পঙ্কজ দেবনাথ এমপি, ফেনী পৌরসভার মেয়র আলাউদ্দিন, ঢাকা দক্ষিণের ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদউদ্দিন আহম্মেদ রতন, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ময়নুল হক মঞ্জু, ঢাকা উত্তরের ওয়ার্ড কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম সেন্টু, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাতেনুল হক ভূইয়াসহ কয়েকজনের ব্যাপারে তদন্ত করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দেয়া নগদ অর্থ সহায়তা কর্মসূচির সুবিধাভোগীর তালিকা প্রণয়নে অনিয়ম ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল আত্মসাৎ সহ বিভিন্ন অভিযোগে ১০০ জনপ্রতিনিধি সাময়িকভাবে বরখাস্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৩০ জন ইউপি চেয়ারম্যান, ৬৪ জন ইউপি সদস্য, একজন জেলা পরিষদ সদস্য, চারজন পৌর কাউন্সিলর এবং একজন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রয়েছেন। এরপরও নানরকম অপরাধ অপকর্ম থেকে তাদের থামানোই যাচ্ছে না।
দিনাজপুরের পার্বতীপুর পৌরসভার মেয়রের বিরুদ্ধে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। পুলিশ জানায়, পার্বতীপুরে দরিদ্র এক নারী চাকরির জন্য পৌর মেয়র এ জেড এম মেনহাজুল হকের কাছে যান। চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন মেয়র। ধর্ষণের ছবি মোবাইলে ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়। সবশেষ গত ২৯ জুন মেয়েটি প্রতিবাদ করলে পৌর মেয়র মেনহাজুল হক ও তার সহযোগীরা তাকে ব্যাপক মারধর করেন। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় গত দোসরা জুলাই নির্যাতিতা বাদী হয়ে পৌর মেয়রকে আসামি করে পার্বতীপুর থানায় একটি মামলা করেন। এরপর থেকে পলাতক রয়েছেন মেয়র। ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধেও এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মেয়রসহ ৬ জনকে আসামী করে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ধর্ষণের শিকার ওই নারী। পটুয়াখালীর বাউফলে জোড়া হত্যা মামলার প্রধান আসামী হয়েছেন কেশবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মহিউদ্দিন আহম্মেদ লাভলু। ইতিমধ্যে তিনি গ্রেপ্তার হয়ে জেল হাজতে থাকায় চেয়ারম্যান পদ থেকে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করার আদেশও জারি হয়েছে।