সাভার প্রতিনিধি : সাভারে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে সাংবাদিক দের কি ভাবে নিউজ করতে হবে সেই নির্দেশনা দিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনির হোসাইন খান।
তিনি সাংবাদিকদের বলে , প্রার্থীদের সম্পদের বিবরণ নিয়ে কোনও প্রশ্ন করা যাবে না, সংবাদ প্রকাশ করা যাবে না। প্রার্থীদের কোনও নেতিবাচক বিষয় নিয়েও খবর প্রকাশ করা যাবে না। খবর প্রকাশ করলে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের অফিসে রিপোর্ট করার ভয়ও দেখিয়েছেন তিনি।
বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকালে আসন্ন সাভার পৌরসভা নির্বাচন সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে সাভার সরকারি কলেজ ভবনে আয়োজিত সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাভার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফখর উদ্দিন শিকদার, মিরপুর থানা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহজালাল, সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএফএম সায়েদ প্রমুখ।
মতবিনিময়সভায় রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনির হোসাইন খান বলেন, ‘নির্বাচন একটি সেনসিটিভ জিনিস, একটা নিউজের জন্য পুরো গণ্ডগোল হয়ে যাবে, পুরো পরিস্থিতি পাল্টে যাবে, পরিস্থিতি কন্ট্রোলে আনা টাফ হয়ে যাবে। একটা বেফাঁস কথা বা বেফাঁস খবর এরকম যদি ছাপায়ও, আমার বা আপনাদের মতামত, হয়তো তার দৃষ্টি আছে বা নেই, যতটুকু অ্যাভোয়েড করা যায় করতে হবে। নেগেটিভ থাকলেও সবকিছু পজিটিভলি দেখতে হবে। আমাদের নির্বাচন ঠিক থাকতে হবে।’
এটা গভর্নমেন্টের একটা শিডিউল বা নির্বাচন কমিশনের শিডিউল, এটা নিয়ে কোনও সময় আপস নেই। আমরা সবাই পজিটিভলি দেখবো। কারো কোনও ভুল ভ্রান্তি থাকলে আমরা পারসোনালি বলবো। একটা নিউজ করে দিলে হয়তো আপনার একটু ক্রেডিট হবে, কিন্তু আমার জন্য, ওসি সাহেবের জন্য, সাভার পৌরবাসীর জন্য বিষয়টি কষ্টকর হয়ে যাবে। কোনও নেগেটিভ ঘটনা ঘটলে আপনারা আমাকে জানাবেন, আমি যদি কোনও ব্যবস্থা না নেই, তখন আপনারা নিউজ পরিবেশন করবেন।’
এসময় নিজ নিজ বক্তব্যে উপস্থিত সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ অন্যান্য কর্মকর্তারাও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে সাংবাদিকদের পৌরসভা নির্বাচন সম্পর্কিত নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করেন।
মো. মুনির হোসাইন খান এসময় সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে আরও বলেন, ‘সাংবাদিকরা অনেক সময় নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের সম্পদের বিবরণ নিয়ে প্রশ্ন করেন। এতে ওই প্রার্থী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন, তার নির্বাচনি কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়। এগুলো কিন্তু করা যাবে না, যদি কেউ করেন, আমি কিন্তু তার অফিসে রিপোর্ট করবো।’
এসময় জেলা রির্টার্নিং কর্মকর্তার এমন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে নাদিম হোসেন নামে স্থানীয় এক সাংবাদিক সম্প্রতি ধামরাই পৌরসভার নির্বাচনের কিছু অনিয়ম তুলে ধরে কেন্দ্রের ভোটকক্ষে কোনও অনিয়ম হলে সেই সংবাদ প্রকাশ করাতে কোনও আইনি বাধা আছে কিনা জানতে চান। এর জবাবে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, ‘গোপন কিংবা ভোট কক্ষের কোনটারই ছবি তোলা যাবে না। শুধু কেন্দ্রে ভোটারদের লাইনের ছবি তোলা যাবে।’
সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এসময় ধামরাই পৌরসভা নির্বাচনে অনেক প্রিজাইডিং কর্মকর্তা সাংবাদিকদের কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা ও সাংবাদিকদের রুঢ় আচরণ করার বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, সাভার পৌরসভা নির্বাচনেও এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে সাংবাদিকরা কি সংবাদ প্রকাশ করবে না? এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের নিয়ে বসবো। সেখানে তাদের প্রশিক্ষণ হবে, সেখানে তাদের সকল নির্দেশনা দেওয়া থাকবে।