সাভার প্রতিনিধি: সাভারে কিশোর গ্যাংয়ের হাতে খুন হওয়া স্কুল শিক্ষার্থী রোহান হত্যাকান্ডে জড়িতদের ফাঁসির দাবিকে মানববন্ধ করেছে নিহতের পরিবার, স্বজন ও এলাকাবাসীরা। বুধবার দুপুরে সাভার প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়। এসময় আয়োজিত মানববন্ধনে একাত্বতা প্রকাশ করেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, নারী ও শিুশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত বিভিন্ন পাঁচ শতাধিক লোকজন।
মানববন্ধন চলাচকালে বিভিন্ন ফাঁসির দাবিসহ বিভিন্ন স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠে পুরো প্রেসক্লাব এলাকা। এসময় সাভার থানা রোডর বঙ্গবন্ধু চত্বর থেকে সাভার কলেজ এবং আশপাশের রাস্তার দুই ধারে সারিবদ্ধভাবে দাড়িয়ে নির্মম এ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ জানায় অংশগ্রহনকারীরা। সকলের মুখে একই দাবি রোহাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যার সাথে জড়িত সকলকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে ফাঁসি কার্যকর করা।
আয়োজিত মানববন্ধন থেকে রোহানের বাবা আব্দুস সোবাহান বলেন, গত ৬ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যায় আমার ছেলে রোহানুল ইসলাম রোহানকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে কিশোর গ্যাং লিডার হৃদয় ও তার সহযোগীরা। হৃদয়ের সাথে আমার ছেলের কোন সম্পর্ক কিংবা বিরোধ না থাকলেও একটি মেয়ের কারনে আমার ছেলেকে খুন হতে হয়েছে আমি তার বিচার চাই।
তিনি আরও বলেন, আমাদের কর্ণপড়া এলাকার জমি ব্যবসায়ী হাজী আহসান উল্লার বড় মেয়ে মাইদা হাসান আমার ছেলেকে পছন্দ করলেও রোহান তাকে প্রত্যাক্ষান করে। পরবর্তীতে ব্যাংককলোনী এলাকার এ্যাসেড স্কুল পড়ার সুবাদে ওই মেয়ে হৃদয়ের সাথে সম্পর্ক করে পরিকল্পিতভাবে তাকে দিয়ে আমার ছেলেকে হত্যা করিয়েছে। ওই মেয়ে দুই দিন আগেও রোহানের সাথে ম্যাসেঞ্জারে কথা বলেছে। আমাদের দাবি অনতি বিলম্বে ওই মেয়েকে গ্রেপ্তার করে আইনের আনা হোক। তাহলেই সকল আসামীকে ধরা যাবে এবং সুষ্ঠ বিচার হবে।
মাথায় কালো কাপড় বাঁধা আব্দুস সোবাহান আরও বলেন, প্রিয় এলাকাবাসী আমি আমার ছেলে হারিয়েছি, কিন্তু আপনাদের আর কারও যেন ছেলে হারাতে না হয় আপনারা সেই ব্যবস্থা নিবেন। আজকে আমার বুক খালি হয়েছে, কালকে যেন আর কারও বুক খালি না হয় সেজন্য খুনিদের শাস্তির নিশ্চিত করতে মিডিয়াসহ সকলের সহযোগীতা চাই। পুলিশ আমাদেরকে আশ^াস দিয়ে তারা হত্যাকান্ডের উপযুক্ত বিচাররের ব্যবস্থা করবেন।
উল্লেখ্য প্রেম সংক্রান্ত বিরোধের জেরে গত ৬ ফেব্রুয়ারী রাতে রোদেলা মডেল স্কুলের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী রোহানুল ইসলাম রোহানকে পুর্বপরিকল্পিপভাবে ডেকে নিয়ে এলোপাথারী মারধর ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার করে হৃদয় রাহিদসহ ৩০-৪০ জন কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। এঘটনায় নিহত রোহানের বাবা আব্দুস সোবাহান বাদী হয়ে ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় ১৫/২০ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গ্যাং লিডার হৃদয়সহ দুই হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে।