ধামরাইয়ে পদ্মা সেতু বানানো স্কুলছাত্রকে আর্থিক সহায়তা দিলেন মোঃ আরিফুল ইসলাম - Meghna News 24bd

সর্বশেষ


Saturday, May 1, 2021

ধামরাইয়ে পদ্মা সেতু বানানো স্কুলছাত্রকে আর্থিক সহায়তা দিলেন মোঃ আরিফুল ইসলাম

আবুল কালাম আযাদ,ধামরাই(ঢাকা)  : মাটি, বাঁশ ও সিমেন্ট দিয়ে পদ্মা সেতুর আদলে সেতু বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে ঢাকার ধামরাইয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র সোহাগ। তার বানানো এই পদ্মা সেতু দেখেই আসল পদ্মা সেতু না দেখা অনেকেই স্বাদ মেটাচ্ছেন। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পদ্মা সেতু দেখতে তার বাড়িতে মানুষের ভিড় জমে।

সোহাগ ধামরাইয়ের সুতিপাড়া এলাকার কৃষক মোহাম্মদ সুলতান আলীর ছেলে। সে ভালুম আতাউর রহমান খান স্কুল ও কলেজে ব্যবসা শাখার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

সরেজমিনে ধামরাইয়ের সুতিপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সোহাগ নিজ বাড়িতে অবিকল পদ্মা সেতুর আদলে একটি সেতু তৈরি করেছে। বাঁশ, সিমেন্ট, মাটি ও রঙ দিয়ে রূপ দিয়েছে চমৎকার একটি পদ্মা সেতুর। এটি যে কারও নজর কাড়বে। সেতুটি দেখতে শুধু গ্রামবাসীই নয়, দূর-দূরান্ত থেকে এসে ভিড় জমাচ্ছেন অনেকেই। শুরুতে বাবা-মা বকাঝকা ও প্রতিবেশীরা কটু কথা শুনালেও পদ্মা সেতুর রূপ দেখে এখন তারা খুশি।

সোহাগের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করে। এর আগে ২০১৯ সালে একটি সেতু তৈরি করেছিল সে। তবে সেতুটি শুধু মাটি ও বাঁশ দিয়ে তৈরি করায় নির্মাণের কিছু দিন পরই ভেঙে নষ্ট হয়ে যায়। পরে হুবহু পদ্মা সেতু বানানোর পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত বছরের ১ নভেম্বর নির্মাণ কাজ শুরু করে। দীর্ঘ পাঁচ মাস পর ২৬ মার্চ তার পদ্মা সেতু বানানোর কাজ শেষ হয়।

সেতুটি তৈরিতে মাটি, বাঁশ, সিমেন্ট, মোবাইলে ব্যবহার করা ছোট বাতি ও সাদা-কালো রঙ ব্যবহার করেছে সোহাগ। বাড়ির আঙ্গিনায় এই পদ্মা সেতু তৈরি করেছে সে। সেতুটিতে চারটি লেন করা হয়েছে। স্থাপন করা হয়েছে বাতি। নিচ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে রেললাইন। নিচে মাটি খুঁড়ে রূপ দেওয়া হয়েছে পদ্মা নদীর। দুই লেনের মাঝখানে ফুলের চারাসহ এক প্রান্তে রয়েছে চেকপোস্ট। এক কথায় প্রাণবন্ত একটি পদ্মা সেতু। দেখে মন ভরে যায় দর্শনার্থীদের।

এ ব্যাপারে সোহাগের বাবা সুলতান আলী বলেন, যখন সোহাগ এই সেতু বানাতে শুরু করে তখন লেখাপড়ায় তেমন মনোযোগ ছিল না। এজন্য সোহাগকে অনেক বকাঝকা করতাম, ধমক দিয়ে বলতাম কি করচ এগলা! এখন সোহাগের বানানো পদ্মা সেতু দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসছে। এতে গর্বে বুক ভরে যাচ্ছে। আমার ছেলের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।

সোহাগ বলে, পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যান বসানোর দিনই সিদ্ধান্ত নিই আমি একটি সেতু বানাবো। কিন্তু কোনো ধরনের নকশা ও পর্যাপ্ত অর্থ আমার কাছে ছিল না। এজন্য পর পর দুটি সেতু তৈরি করলেও তা ভেঙে যায়। পরে ইন্টারনেট থেকে নকশা সংগ্রহ করি। হাত খরচের টাকা দিয়ে সিমেন্ট ও বাঁশ সংগ্রহ করে ধীরে ধীরে সেতুটি তৈরি করি। প্রথম দিকে বাবা-মা অনেক বকাঝকা করতো। আশপাশের মানুষও কটু কথা বলতো। কিন্তু আমি আমার মত কাজ করেছি। আজ মানুষ এসে ভিড় করছে সেতুটি দেখার জন্য। এতেই বাবা-মা অনেক খুশি। আমারও ভালো লাগছে। তবে আরও ভালো কিছু করতে চাই।

সোহাগ বলে, আমি বড় হয়ে একজন ভালোমানের ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই। দেশে আর কোনো সেতু তৈরিতে যেন বিদেশিদের সহযোগিতা প্রয়োজন না হয়, সেজন্য আমি প্রস্তুত হতে চাই। দেশসহ বিদেশে গিয়ে কাজ করতে পারি এমন একজন দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই।


সুতিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান  পদপ্রার্থী ও আওয়ামিলীগের সাধারন সম্পাদক পদপ্রার্থী , কালামপুর বনিক সমিতির সভাপতি , পপুলার রুলার ডেভলেমমেন্ট  অর্গানাইজেশনের নির্বাহী পরিচালক মোঃ আরিফুল ইসলাম  বলেন, লোকমুখে শুনে আমিও সোহাগের বানানো পদ্মা সেতু দেখতে  এসেছি । এত অল্প বয়সেই এমন প্রতিভা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। বঙ্গবন্ধুর সোনার দেশে এমন প্রতিভাবানদের প্রতিভা বিকাশে আমি সোহাগকে  কিছু সহায়তা করলাম এবং সব ধরনের সহযোগিতা করবো ইনশাআল্লাহ।

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here

Pages