হুমায়ুন কবির, গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে একটি আঞ্চলিক সড়কের কাজ শেষ হতে না হতেই বিভিন্ন স্থানে সুরঙ্গ ও ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রীসহ নানা অনিয়মের কারণে সড়কটি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এতে ওই সড়কের ক্ষতিগ্রস্থ স্থানে দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন সড়কের ক্ষতিগ্রস্থ স্থানগুলো কয়েক ধাপে কোন রকমে মেরামত করা হলেও অল্প সময়ের মধ্যে আবারও সুরঙ্গ ও ফাটল সৃষ্টি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
এলাকাবাসী, পরিবহন শ্রমিক এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার কালিয়াকৈর-ফুলবাড়িয়া আঞ্চলিক সড়কে এ ঘটনা ঘটেছে। বছর তিনেক আগেও বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়ে প্রায় যান চলাচলের অনুপযোগী হয় সড়কটি। ফলে প্রতিনিয়ত যানবাহন বিকল হওয়াসহ চরম জনদুভোর্গে পড়েন মানুষ। ওই সময় বেহাল সড়কটি নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হলে সংশ্লিষ্ট কতর্ৃপক্ষের দৃষ্টি গোচর হয়। এরপর ৭৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ওই সড়কের উন্নয়ন কাজ আসে। কাজটি পায় আরবিএল এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। পরে ওই প্রতিষ্ঠানটি ২০১৮ সালে সড়কের কাজটি শুরু করলেও নিম্নমানের সামগ্রীসহ নানা অনিয়মের মাধ্যমে ২০২০ সালে তা শেষ হয়। কিন্তু কাজটি শেষ হতে না হতেই সড়কের আমতলী, বাংলাবাজার, পাইকপাড়া, নামাশুলাই, বলিয়াদি, ডুবাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় সুরঙ্গ ও ফাটল দেখা দেয়। এছাড়াও এ রাস্তায় কয়েকটি ব্রিজ নিমার্নেও ব্যাপক অনিয়মের মাধ্যমে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়। খবর পেয়ে চুক্তিপত্র অনুযায়ী ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সড়কের ক্ষতিগ্রস্থ স্থানগুলো কোন রকমে মেরামত করে। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাতে নামাশুলাই এলাকায় ওই সড়কের মাঝখানে আবারো সুরঙ্গের সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে স্থানীয় লোকজন সেখানে বাঁশে লাল কাপড়ের নিশান লাগিয়ে সুরঙ্গের মধ্যে ঠাঙ্গিয়ে দিয়েছে। তাদের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজস করে ঠিকাদারী লোকজন নিম্নমানের সামগ্রীসহ নানা অনিয়মের কারণে সড়কটি এমন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। সড়কের ক্ষতিগ্রস্থ স্থানগুলো কয়েক ধাপে কোন রকমে মেরামত করা হলেও অল্প সময়ের মধ্যে আবার সুরঙ্গ ও ফাটল সৃষ্টি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
কাজ শেষে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি চলে যাওয়ায় এ বিষয়ে তাদের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে ওই প্রতিষ্ঠানের মালামাল রাখার একটি ক্যাম্পের দেখভালের দ্বায়িত্বে থাকা আতাউর রহমান খান জানান, খবর পেয়ে ওই গর্তটি মেরামত করা হচ্ছে। তবে ঈদের ছুটি শেষে সেখানে খুদাই করে পুনরায় মেরামত করা হবে।
কাজের অনিয়মের বিষয়টি অস্বীকার করে গাজীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী রাশেদুল হাসান বলেন, শুনেছি ওই সড়কের মাঝখানে একটি গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। লোক পাঠিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ স্থান মেরামত করা হয়েছে। এছাড়া সড়কটি ক্ষতিগ্রস্থ হলেও সাধারণত ১ বছর থেকে ৩ বছর পর্যন্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ক্ষতস্থান মেরামত করে থাকে।