গাজীপুর প্রতিনিধি : গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সোমবার সকালে ক্ষমতার দাপটে প্রায় সাড়ে ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নবনির্মিত উপজেলা খাদ্য গুদামের নিরাপত্তা সেড ও সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশ উপেক্ষা করে খাদ্য গুদামের নিরাপত্তা সেড ও সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন কর্তব্যরত কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অরক্ষিত রয়েছে খাদ্য গুদামটি।
এলাকাবাসী, খাদ্য গুদাম ও পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, গত মে মাসে কালিয়াকৈর উপজেলার লতিফপুর এলাকায় সরকারি উপজেলা খাদ্য গুদামের নিরাপত্তা সেড, সীমানা প্রাচীর ও পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে। যার ব্যয় হয়েছে প্রায় সাড়ে ১৪ লাখ টাকার বেশি। নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ওই উন্নয়ন কাজ আংশিক শেষ হলেও কাউন্সিলরের বাধার কারনে প্রাচীরের বাকী কাজ শেষ না করেই পালিয়ে যায় ওই কাজের ঠিকাদার। এর মধ্যেই নিরাপত্তা সেড ও সীমানা প্রাচীরে হানা দেন কালিয়াকৈর পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারুক হোসেন। তিনি পৌরসভার পক্ষ থেকে ৬ ফুটের পায়ে হাটার রাস্তাটি জোরপূর্বক ১২ ফুট প্রশস্ত করার চেষ্টা করছেন। এ লক্ষে তিনি দুপাশে বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙ্গা হলেও ওই রাস্তার অভিমুখে পৌরসভার প্রভাবশালী ঠিকাদার ও মেয়রের আত্নীয় হুসেন আলীর সীমানা প্রাচীর ভাঙ্গেনি। ওই ঠিকাদারের সীমানা প্রাচীর কৌশলে অক্ষত রেখে ক্ষমতার দাপটে ওই কাউন্সিলর তার লোকজন নিয়ে সোমবার সকালে উপজেলা খাদ্য গুদামের নিরাপত্তা সেড ও সীমানা প্রাচীর ভাঙ্গা শুরু করেন। খবর পেয়ে ওই খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সেখানে বাধা দিতে গেলে তাদেরও বিভিন্ন ধরনের হুমকি-দমকি দেন কাউন্সিলর ফারুক। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যান এবং খাদ্য গুদামের নিরাপত্তা সেড ও সীমানা প্রাচীর ভাঙ্গা বন্ধ করেন। এসময় ভাংচুর বন্ধ রাখলেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চলে গেলে আবারও ভাংচুর শুরু করেন ওই কাউন্সিল ফারুক ও পৌরসভার প্রকৌশলী ফেরদৌস আলম। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ওই খাদ্য গুদামের কর্তব্যরত কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অরক্ষিত রয়েছে খাদ্য গুদামের প্রায় ৫ কোটি টাকা মুল্যের মালামাল। এদিকে ক্ষমতার দাপটে সরকারী প্রতিষ্ঠানে ভাংচুরের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় লোকজন।
সরকারী প্রতিষ্ঠানে ভাংচুরের ঘটনাটি সাংবাদিকরা ক্যামেরায় ধারণ করতে গেলে ক্ষিপ্ত হন ওই কাউন্সিলর ফারুক হোসেন। এসময় তিনি বলেন, রাস্তা প্রশস্ত করণের জন্য এটা ভাঙ্গা হচ্ছে।
ওই খাদ্য গুদামের খাদ্য পরিদর্শক আবুল কালাম জানান, খাদ্য গুদামের পাশের ওই রাস্তাটি প্রশস্ত করলে স্থানীয়দেরও বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙ্গা পড়বে। এ কারণে স্থানীয় লোকজন মাননীয় খাদ্য মন্ত্রী মহোদয়ের বরাবর একটি আবেদন করেছেন। পরে এ বিষষে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসে আমাদের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু ওই কাউন্সিলর কোনো রহম অনুমতি না নিয়ে আমাদের নিরাপত্তা সেড ও সীমানা প্রাচীর ভাংচুর করছেন।
কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই খাদ্য গুদামে ভাংচুর বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে মৌখিকভাবে জনগণের স্বার্থে রাস্তার জন্য খাদ্য গুদামের নতুন সীমানা প্রাচীর নির্মাণের পর সেটা ভাঙ্গার কথা বলা হয়েছে।