হুমায়ুন কবির, গাজীপুর প্রতিনিধি : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আলহাজ্ব এ্যাড. আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু পৃথিবীর মধ্যে শ্রেষ্ঠ শাসক ছিলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য শ্রেষ্ঠ রাষ্ট্র নায়ক ছিলেন। সেটাও কম আলোচনার নয়। আমরা বঙ্গবন্ধুকে ভালবাসি, শ্রদ্ধাশীল এটা শুধু মুখে মুখে বললে হবে না। কাজের মাধ্যমে সেগুলো প্রমাণ করতে হবে। তাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করতে হবে, তাঁর চিন্তাধারা কি ছিল? তিনি কি চেয়েছিলেন? শুধু তার নামকে ভালবাসলে হবে না, তার কর্মকে ভালবাসতে হবে।
রবিবার বিকেলে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি আয়োজিত মুজিববর্ষ সমাপনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে র্যাবের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, র্যাবের বিষয়ে যারা চিঠি দিচ্ছেন, তারাই কারণটা ভাল বলতে পারবেন। আমার মনে হয় অসত্য তথ্যের উপর ভিত্তিতে উনারা বক্তব্য রাখছেন। সব সঠিক তথ্য তারা সংগ্রহ করেন বা জেনেন তাহলে এ ধরনের কথা বলতে পারেন না। যেকোনো মানুষের জীবনে সফলতাও থাকে, আবার ব্যর্থতাও থাকে। এ রকম র্যাব একটা বিরাট বাহিনী। র্যাবের ৫/১০ জন খারাপ থাকতে পারে। তার অর্থ এই না যে পুরো বাহিনীকে খারাপ বলা যাবে? আমরা কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়, র্যাবও আইনের উর্ধ্বে নয়। সুনিদিষ্ট করে অভিযোগ থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে বিচার হবে, শাস্তি হবে। কিন্তু সামুগ্রীকভাবে একটা বাহিনীতে ৫/১০ জনের জন্য দুসারোপ করা ঠিক হয়নি।
তিনি আরো বলেন, এশিয়া মহাদেশে বাংলাদেশেই প্রথশ ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। আজকে পর্যন্ত সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে এখানে পাঠ্যসূচী হচ্ছে। আমাদের এ ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য সূচী অন্য দেশগুলো শিখবে এবং সে অনুযায়ী পাঠ্যসূচী শিক্ষার কাঠামো করবে। আমাদের ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুকরণ ও অনুস্বরণ করে অন্য দেশেও এর প্রসার ঘটবে।
অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নুর বলেন, বিশ্ব এখন জোর পায়ে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দিকে। বাংলাদেশও রয়েছে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দ্বারপ্রান্তে, এই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যেই এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ শিক্ষার্থীদের চতুর্থ শিল্প বিপ্লব উপযােগী দুটি প্রোগ্রাম ইন্টারনেট অব থিংস ও আইসিটিই ইন এডুকেশন এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত করছে। এছাড়াও এই বিশ্ববিদ্যালয়, নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অনুপ্রাণিত ও উজ্জীবিত করে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা দর্শন বাস্তবায়নের কাজ করবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে নেতৃত্ব প্রদান করবে।
উপাচার্য বলেন, করোনাভাইরাসের মহামারির কারণে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম সচল রেখেছিল দেশের প্রথম এ ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি। করোনাকালীন সময়ে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রোগ্রামের ক্লাসসমূহ অনলাইনে সম্পন্ন করা হয়। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ, গ্রুপ ওয়ার্ক, প্রেজেন্টেশন এবং অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেয়ার কাজগুলো সম্পন্ন করেছে। অনলাইন ক্লাস থেকে ঝরেপড়া রোধ এবং শিক্ষায় উৎসাহিত করতে শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাস এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ই-লাইব্রেরি ব্যবহার করার জন্য ইন্টারনেট বিল বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১৬৩ জন শিক্ষার্থীকে টাকা প্রদান করা হয়েছে। ক্লাসগুলি ফ্লিপ পদ্ধতিতে কোলাবোরেটিভ লার্নিং প্যাডাগোজিতে নেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে তৈরিকৃত প্রক্টর রিমোট এক্সাম সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে স্থগিত পরীক্ষাসমূহ যথার্থ ও নির্ভরযোগ্যভাবে অনলাইনে শেষ করা হয়। অনলাইনে যথাযথভাবে ক্লাস ও নিজস্ব সফটওয়্যারে পরীক্ষা সম্পন্ন করে এ ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়টি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
এরআগে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ওই অনুষ্ঠানে “বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম ” স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন।