গাজীপুর প্রতিনিধি : গাজীপুরের কালিয়াকৈরে অভিযানে গিয়ে গোপন বৈঠকের পর উচ্ছেদ না করে ফিরে গেলো সড়ক ও জনপথ বিভাগের লোকজন। সরকারী অর্থ খরচ করে ঢাকঢোল পিটিয়ে অভিযানে এসে উচ্ছেদ না করায় ক্ষুব্দ হয়েছেন স্থানীয়রা। ঘটনাটি ঘটেছে ধামরাই-মাওনা সড়কের উপজেলার কালিয়াকৈর বাজার এলাকায় মঙ্গলবার দুপুরে।
এলাকাাসী ও গাজীপুর সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার ধামরাই-মাওনা সড়কের বিভিন্ন স্থানে জবর-দখল করে ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। কালিয়াকৈর বাজার এলাকায় সব চেয়ে বেশি সড়কের জমি দখল হয়েছে। দখলদারদের মধ্যে রয়েছেন নেতা, ইউপি চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ। তারা স্থানীয় সড়ক বিভাগের অসাধু কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজস করেই এসব অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ। সড়কের জমি ও সড়ক দখল করে এসব অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠার কারণে প্রায় প্রতিদিনই ওই বাজার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। চরম দুর্ভোগে পড়েন পথচারী, পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীরা। এ বিষয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয়। পরে এসব অবৈধ স্থাপনা সড়িয়ে নিতে একাধিক নোটিশ দিয়েছে সড়ক বিভাগ। কিন্তু দখলদাররা নাছোর বান্দা। ওই নোটিশের কোনো তোয়াক্কা না করে অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ম্যানেজের মাধ্যমে অবৈধ স্থাপনায় তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে একাধিকবার লোক দেখানো অভিযান চালিয়ে অল্পকিছু দোকানপাট ভেঙ্গে ফিরে যায় সড়ক বিভাগ। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার সকালে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কার্য সহকারী আব্দুর রহমানসহ সড়ক বিভাগের লোকজন মঙ্গলবার সকালে কালিয়াকৈর বাজার এলাকায় উচ্ছেদ অভিযানে যান। ঢাকঢোল পিটিয়ে একটি ভেকু নিয়ে অভিযানে গেলেও দুপুর পর্যন্ত উচ্ছেদ করা হয়নি। পরে স্থানীয় বাজার কমিটির লোকজন ও কয়েক দখলদারদের নিয়ে গোপন বৈঠক করে ভেকু নিয়ে চলে যায় সড়ক বিভাগের লোকজন। সরকারী অর্থ খরচ করে ঢাকঢোল পিটিয়ে অভিযানে এসে উচ্ছেদ না করায় ক্ষুব্দ হয়েছেন স্থানীয় লোকজন। তাদের অভিযোগ, সড়ক বিভাগের অসাধু কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজস করে দখলদাররা এসব অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলেছে। বিভিন্ন সময় ঢাকঢোল পিটিয়ে অভিযান চালালেও দখলদারদের সাথে এভাবে গোপন বৈঠক করে সড়ক বিভাগের লোকজন চলে যায়। ফলে যানজটে নাকাল এ কালিয়াকৈর বাজারের চিত্র পরিবর্তন হচ্ছে না। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ দুর্ভোগের বিষয় নিয়ে বারবার মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় আলোচনা হলেও তেমন কোনো প্রদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ।
দখলদারদের সাথে গোপন বৈঠকের বিষয়টি অস্বীকার করে গাজীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের কার্য সহকারী আব্দুর রহমান জানান, উচ্ছেদ অভিযানে গেলে দখলদাররা ও বাজার সমিতির লোকজন সময় চাইলে দুদিনের সময় দিয়ে আমরা চলে আসি।
গাজীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (কালিয়াকৈর এড়িয়া) রাশেদ খান ফোনে জানান, ওই বাজার এলাকায় অবৈধ স্থাপনা সড়িয়ে নিতে একাধিকবার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। দখলদাররা স্থাপনা সড়িয়ে না নিলে অভিযানে যাওয়া হয়। এসময় দখলদাররা নিজ উদ্যোগে তাদের মালামাল সড়িয়ে নেওয়ার কথা বললে দুদিনের সময় দিয়ে উচ্ছেদ অভিযান থেকে ফিরে আসা হয়। তবে এরপরও সড়িয়ে না নিলে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।