হুমায়ুন কবির, গাজীপুর প্রতিনিধি : গাজীপুরের কালিয়াকৈরে দুই ভূয়া ডিবি পুলিশকে আটক করে কালিয়াকৈর থানা পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী। পুলিশের দাবী, তারা নিজেদের ডিবি পুলিশসহ বিভিন্ন পরিচয় দিয়ে সারা দেশে চুরি-ছিনতাই করতো। তাদের নামে আছে হত্যাকান্ডসহ একাধিক মামলাও। মঙ্গলবার গ্রেপ্তারকৃত ওই দুজনকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নড়াইলের কালিয়া থানার দেবীপুর এলাকার মৃত বাবু মোল্লার ছেলে বসার ওরফে বাশার (৪১) ও গাজীপুরের কাপাসিয়া থানার পাবুর এলাকার মৃত হাফিজ উদ্দিনের ছেলে দুলাল হোসেন (৪৫)।
এলাকাবাসী, ভুক্তভোগীর পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার সকালে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিয়াকৈর উপজেলার পল্লীবিদ্যুৎ এলাকায় অটোরিকশা নিয়ে অবস্থান করছিলেন চালক সবুজ শেখ। বেলা সাড়ে ১১টার দিকেই তার অটোরিকশায় হানা দেয় ওই ভূয়া ডিবি পুলিশ চক্রটি। পাশের হরিণহাটি বাসষ্টেশনের এপেক্স কারখানার সামনে যাওয়ার কথা বলে তার অটোরিকশায় উঠেন ওই চক্রের সদস্য বাসার। কিন্তু সেখানে পৌছানোর আগেই তিনি নেমে যান এবং ওই চক্রের অপর সদস্য দুলালকে নিয়ে সামনে যেতে বলেন। মাত্র ২০০ গজ সামনে গেলেই দুলাল নিজেকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে অটোরিকশা থামান এবং নেমে যাওয়া বাসারকে ডেকে আনতে বলেন। প্রথমে যেতে রাজি হননি অটোচালক, পরে তিনি ডিবি পুলিশের ভয়ে অপরজনকে ডাকতে যান। কিন্তু তিনি পিছন ফিরে দেখেন ওই দুজন একটি প্রাইভেটকার যোগে এবং অজ্ঞাত আরো ২/৩ জন অটোরিকশা ও সেখানে থাকা একটি মোবাইল ফোন নিয়ে চলে যাচ্ছে। এসময় তার ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন একটি পিকআপ নিয়ে ধাওয়া দিয়ে ওই প্রাইভেটকারের গতিরোধ করে। পরে ওই দুই ভুয়া ডিবি পুলিশকে গণধুলাই দিয়ে কালিয়াকৈর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। এসময় ওই চক্রের ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটি আটক করা হয়। এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই অটোরিকশা চালক সবুজ শেখ বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরের দিন মঙ্গলবার দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের গাজীপুর জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। শুধু সবুজ শেখের অটোরিকশা চুরিই নয়, ওই চক্রটি আশুলিয়া ও কালিয়াকৈরসহ বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে সারাদেশে এসব অটোরিকশা চুরি ও ছিনতাই করে আসছিল। এছাড়াও এসব অপরাধ লোকাতে তারা হত্যাকান্ডেও জড়িয়ে আছে।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান জানান, ওই চক্রটি ভূয়া ডিবি পুলিশসহ বিভিন্ন পরিচয়ে সারা দেশে চুরি-ছিনতাই করে আসছে। এছাড়াও বিভিন্ন থানায় তাদের নামে হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তবে গ্রেপ্তারকৃত দুজনকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।