সাইদুর রহমান রিমন ঃ ২৫/২৬ বছর আগেও ঠিক এমন করেই আমাদের কাধ, আমাদের হাত এ ভাবেই একজন আরেকজনকে আকড়ে রাখতো, তবে তা অফিসে নয়, কর্তব্যের মাঠে। এরমধ্যে মির্জা মেহেদী তমাল (ক্র্যাব সভাপতি), মোস্তফা কাজল আর আমি ছিলাম ক্রাইম রিপোর্টিংয়ে, অন্যদিকে আসিফ ছিলেন খেলাধুলার খবর নিয়ে। আমাদের সঙ্গে দেখা হবার, আড্ডা দেয়ার কমন জায়গা ছিল ডিবি পিআর পুকুরপাড়, ডিবি ক্যান্টিন আর পল্টন জিরো পয়েন্ট বায়তুল মোকাররম এলাকা। তখন রাজনৈতিক অঙ্গন ছিল সরব, অনেক কিছুর সমাধান মিলতো রাজপথের আন্দোলনেই। এখনকার মতো রাজপথ এক গ্রুপের দখলে থাকলে অন্য নেতা চুপিসারে মনোনয়ন হাতিয়ে নেয়ার উপায় ছিল না। এ জন্য মাঝে মধ্যেই রাজপথ উত্তপ্ত হয়ে উঠতো। যখন তা লাঠিসোটা, ককটেল বোমায় গড়াতো তখনই সেখানে তলব করা হতো ক্রাইম বিটের ছুটোছুটি করা তরুণ রিপোর্টার -তথা আমাদের। ওই এলাকায় ঘোরাঘুরির কারণে আসিফসহ কয়েকজন স্পোর্টস রিপোর্টারের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠেছিল আমাদের।
তারপর দীর্ঘ সময়, অনেক উত্থান পতন, বহু হাউজ ঘুরে কিভাবে যেন আমরা ৪ জন একত্রিত হয়েছি, একই হাউজে... রীতিমত চাকরি সূত্রেই।
আজ বাংলাদেশ প্রতিদিন এর রিপোর্টিং ডেস্কে অসুস্থ বন্ধু মোস্তফা কাজলকে নিয়ে আমি আর তমাল যখন সেলফি তুলছিলাম ঠিক তখনই যথারীতি আসিফ ভাইও মিস করেননি, সেই আগের মত কাধে হাত দিয়ে নিয়েই ছবিটা তুলে ফেললেন।
আজ একটা কথা প্রকাশের লোভটা সামলাতে পারছি না তা হলো তমাল প্রসঙ্গে। বরাবরই উড়নচণ্ডী সভাবের তমাল ইয়ার্কি ফাজলামি, হাসি ঠাট্টায় মেতে থাকতো। আগে কখন যে সে সিরিয়াস বলতো আর কখন যে তা ইয়ার্কি করতো তা বুঝতে কষ্ট হতো অনেকেরই। কিন্তু তমাল আমাদের প্রিয় মির্জা মেহেদী তমাল ক্র্যাব সভাপতি হবার পর থেকেই যেনো আমূল বদলে গেছেন। সবাইকে খুঁজে খুঁজে কাছাকাছি রাখতে চান। সবার খোঁজ নেন, কাছে টানেন। পুরনো সাংবাদিক বন্ধুরা যে কোনো বিটেই কাজ করুন না কেন তাদেরকেও খোঁজ নেন, কাছে ডাকেন। বোধকরি সাম্প্রতিক সময়ে সহকর্মী অনেককেই আমরা হারিয়েছি। কে যে কখন হারিয়ে যাই কিংবা কাকে হারাতে হয় সেসব ভাবনা থেকেই হয়তো তমাল প্রতি মুহূর্তকে হৃদ্যতায় আকড়ে রাখতে চান। ধন্যবাদ বন্ধুজন, তোমাদের প্রতি অসীম কৃতজ্ঞতা।