হুমায়ুন কবির, গাজীপুর প্রতিনিধি : গাজীপুরের কালিয়াকৈরে চলাচলের অযোগ্য রাস্তাটি মেরামতের জন্য বার বার ধরণা দিলেও কাজ করেনি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বার। বাধ্য হয়ে নিজস্ব অর্থায়নে রাস্তা মেরামত করে ভিন্ন এক প্রতিবাদ করেছেন গ্রামবাসী। রাস্তা মেরামত চলাকালে রোববার দুপুরে বিক্ষোভ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
গ্রামবাসী ও ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার সূত্রাপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের উত্তর গজারিয়া উত্তরপাড়া গ্রামে প্রায় এক থেকে দেড় হাজার পরিবারের বসবাস। অথচ ওই গ্রামের চলাচলের একটি মাত্র ইটসলিং রাস্তা থাকলেও ইট উঠে ছোটবড় গর্ত ও খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। অবহেলিত এই রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে মেরামত না করায় প্রায় ১ হাজার ৭০০ ফুটের রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে ছিল। এতে ওই এলাকার স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, মসজিদের মুসল্লী, শিল্পকারখানার শ্রমিকসহ চরম দুর্ভোগে পড়েন বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার মানুষ। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েন গর্ভবতী মা ও বিভিন্ন ধরণের মমুর্ষ রোগীরা। ওই রাস্তাটি মেরামতের জন্য গ্রামবাসী ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোলাইমান মিন্টু ও ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) আব্দুল গফুরের কাছে বার বার ধরণা দিলেও তারা কোনো পাত্তা দেননি। এরপর গ্রামবাসী বাধ্য হয়ে রাস্তাটি মেরামতের জন্য বাড়ি বাড়ি টাকা তোলে একটি তহবিল তৈরি করে। পরে গত দুদিন ধরে তাদের ওই নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ১ লাখ ১৬ হাজার টাকা ব্যয়ে ৫০০ ফুট রাস্তার মেরামতের কাজ শুরু করেন। আগামী সপ্তাহ খানেকের মধ্যে রাস্তার মেরামত কাজ শেষ হবে। এছাড়াও ২য় ধাপে গ্রামবাসীর নিজস্ব অর্থায়নে রাস্তাটির পুরো কাজ শেষ করা হবে। রোববার দুপুরে রাস্তা মেরামতের সময় বিক্ষোভ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় লোকজন। তবে গ্রামবাসীর অভিযোগ, মেরামতের খবর পেয়েও ওই ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বার রাস্তাটির কাজ দেখতেও যাননি।
বিক্ষুব্দ নুরুল আমীন, হাশেম আলী, জহিরুল ইসলাম বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ৫/৬ বছর আগে রাস্তাটি ইট সলিং করলেও এখন তা নষ্ট হয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বার বার চেয়ারম্যান-মেম্বারের কাছে গেলেও তারা কোনো পাত্তা দেননি। এ সময় গোলাম মোস্তফা, জাহাঙ্গীর আলম, ইয়াদ আলী বলেন, এই রাস্তাটি এতটাই খারাপ ছিল যে, মোটরসাইকেলও পাশের সিএনজি পাম্পে রেখে বাড়ি আসতো হতো। এ কারণে গ্রামের সবাই মিলে-মিশে টাকা তোলে রাস্তাটি মেরামত করছি। তবে অতিদ্রুত রাস্তাটি কার্পেটিং করে জন দুর্ভোগ লাঘব করার দাবি জানিয়েছেন বিক্ষুব্দ গ্রামবাসী।
স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বার) আব্দুল গফুর জানান, গ্রামবাসী আমার কাছে আসছিল। কিন্তু এটা বড় কাজ তাই রাস্তাটি মেরামত করতে পারি নাই। তবে বাজেট এলে ওই রাস্তার কাজটি করা হবে।
সুত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোলাইমান মিন্টু জানান, এলাকাবাসীর নিজস্ব অর্থায়নে রাস্তাটি মেরামত করতেছে, এটাকে আমি সাধুবাদ জানাই। তবে এলবিএসপি’র কাজ এলে ওই রাস্তার কাজ করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ জানান, গ্রামবাসীর নিজস্ব অর্থায়নে রাস্তা মেরামতের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে বিষয়টি শুনে আগামী বরাদ্দে ওই রাস্তার কাজ করার ব্যবস্থা করা হবে।