গাজীপুর প্রতিনিধি : গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দুটি ওয়ার্ডের কেন্দ্রে ঘোষিত ফলাফল রাঁতেই পাল্টে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিপক্ষ প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে ফলাফল পাল্টে পরাজিত ইউপি সদস্য প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকালে নির্বাচন অফিস ঘেরাও করেছে ভুক্তভোগী প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। এসময় বিক্ষুব্দরা বিভিন্ন শ্লোগানে বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রে ঘোষিত ফলাফল পূর্ণবহালের দাবী জানান প্রার্থীরা।
ভুক্তভোগী প্রার্থী ও তাদের সমর্থক সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ জনু কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সারা দিন সুষ্ঠ সুন্দর ভোট গ্রাহণ ও গণনা শেষে বিকেলে স্বস্ব কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ওই সময় জনসম্মুখে প্রত্যেক প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের ঘোষিত ফলাফলের সিট বুঝিয়ে দেন প্রিসাইডিং অফিসারগণ। পরে বিজয়ী প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা স্ব-স্ব নির্বাচনী এলাকায় বিজয় উল্লাস করে। ওই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের কেন্দ্রে ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী ২৪২ ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হন আপেল প্রতীকের প্রার্থী মোশারফ হোসেন। কিন্তু গভীর রাঁতে কেন্দ্রে ঘোষিত ফলাফল পাল্টে তার প্রতিদ্বন্দ্বী মোরগ প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল বাতেনকে বিজয়ী ঘোষণা করে উপজেলা নির্বাচন রিটার্নিং কর্মকর্তা। অপর দিকে ২নং ওয়ার্ডে কেন্দ্রে ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী ৫৮ ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হন আপেল প্রতীকের প্রার্থী আমিনুল ইসলাম। কিন্তু ওই ওয়ার্ডের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা আব্দুস সাত্তার গভীর রাঁতে কেন্দ্রে ঘোষিত ফলাফল পাল্টে দেন। পরে তার প্রতিদ্বন্দ্বী মোরগ প্রতীকের প্রার্থী মোশারফ হোসেনকে বিজয়ী ঘোষণা করে উপজেলা নির্বাচন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এর প্রতিবাদে পরের দিন গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ভুক্তভোগী প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা উপজেলা নির্বাচন অফিস ঘেরাও করে। এসময় বিক্ষুব্দরা বিভিন্ন শ্লোগানে বিক্ষোভ মিছিল করে। দুপুরে কালিয়াকৈর প্রেসক্লাবের হলরুমে ওই দুই প্রার্থী সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে ৮নং ওয়ার্ডের আপেল প্রতীকের প্রার্থী মোশারফ হোসেন জানান, ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে আমার ফলাফল পাল্টানো হয়েছে। অপর দিকে ২ নং ওয়ার্ডের আপেল প্রতীকের প্রার্থী আমিনুল ইসলাম জানান, টাকার বিনিময়ে তার ফলাফলও পাল্টানো হয়েছে। এ সময় কেন্দ্রে ঘোষিত ফলাফল পূর্ণবহালের দাবী জানিয়ে ওই প্রার্থী বলেন, গত ৩০ নভেম্বর ৭টি ইউপি নির্বাচনেও টাকার বিনিময়ে ফলাফল পাল্টানোর ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে একাধিক মামলাও আছে।
২নং ওয়ার্ডের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা আব্দুস সাত্তার জানান, কেন্দ্রে যে ফলাফল ঘোষণা করেছিলাম, সেটা যোগ-বিয়োগে একটু ভুল হয়েছিল। পরে উপজেলা এসে পুনরায় যোগ দেওয়ার পর ভুলটা ধরা পড়েছে। পরে সঠিক ফলাফল দেওয়া হয়।
এসবের দায় নিতে চান না রিটানিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এ এম শামসুজ্জামান। তিনি জানান, ফলাফল নিয়ে যদি কারো সমস্যা থাকে তাহলে ট্রাইব্যুনালে মামলা করতে পরামর্শ দেন এবং প্রিসাইডিং অফিসারের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ জানান, খোঁজ নিয়ে দেখেছি একটু ভুল করে ফেলেছিলেন। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।