নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ
বর্ষীয়ান সাংবাদিক তোয়াব খান আর নেই। ৮৭ বছর বয়সে তিনি চিরবিদায় নিলেন। তিনি বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
সেখানেই শনিবার (১লা অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১২টায় চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে তার সম্পাদিত দৈনিক বাংলার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
গত বছর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন তোয়াব খান। তবে সেরে উঠেছিলেন তিনি।
তোয়াব খানের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক জানিয়েছেন।
এক শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, “তোয়াব খান ছিলেন বাংলাদেশের সাংবাদিকতা জগতের পথিকৃৎ। তার মৃত্যুতে দেশের গণমাধ্যম জগতে যে শূন্যতার সৃষ্টি হল, তা কখনও পূরণ হওয়ার নয়।”
প্রধানমন্ত্রী তার শোকবার্তায় বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিকের ভূমিকা পালন করেন তোয়াব খান।
তাঁর মৃত্যুতে বাংলাদেশের সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতার বর্ণাঢ্য ইতিহাসের পরিসমাপ্তি ঘটল। প্রয়াতের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।
তোয়াব খানের ছোট মেয়ে আমেরিকা প্রবাসী। তার দেশে ফিরে আসার পরে দাফন ও জানাজার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য, একুশে পদকপ্রাপ্ত দৈনিক বাংলার সম্পাদক, জীবন্ত কিংবদন্তি বর্ষীয়ান সাংবাদিক তোয়াব খানের সাংবাদিকতা জীবনের শুরু ১৯৫৩ সালে সাপ্তাহিক জনতার মাধ্যমে। ১৯৫৫ সালে যোগ দেন দৈনিক সংবাদে। ১৯৬১ সালে তিনি দৈনিক সংবাদের বার্তা সম্পাদক হন। এরপর ১৯৬৪ সালে যোগ দেন দৈনিক পাকিস্তানে। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালের ১৪ জানুয়ারি দৈনিক পাকিস্তান থেকে বদলে যাওয়া দৈনিক বাংলার প্রথম সম্পাদক হিসাবে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
তোয়াব খান ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেস সচিব ছিলেন। প্রধান তথ্য কর্মকর্তা ও প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালকের দায়িত্বও পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে শব্দসৈনিকের ভূমিকা পালন করেন। সে সময় তার আকর্ষণীয় উপস্থাপনায় নিয়মিত প্রচারিত হয় ‘পিণ্ডির প্রলাপ’ নামের অনুষ্ঠান।
দৈনিক জনকণ্ঠের শুরু থেকে গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত পত্রিকাটির উপদেষ্টা সম্পাদক ছিলেন তিনি।
এরপর নতুন আঙ্গিক ও ব্যবস্থাপনায় প্রকাশিত দৈনিক বাংলার সম্পাদকের দায়িত্ব নেন তিনি।
তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করছে বাংলাদেশ সাংবাদিক ফেডারেশন বিডিএসএফ এর সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা।