জেনে নিই ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকার নামকরণের ইতিহাস - Meghna News 24bd

সর্বশেষ


Thursday, June 22, 2023

জেনে নিই ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকার নামকরণের ইতিহাস


জেনে নিই ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকার নামকরণের ইতিহাস

◾গেন্ডারিয়া:

 ইংরেজি শব্দ Grand Area থেকে এসেছে, এখানে আগেরদিনের অভিজাত ধনী ব্যাক্তিগন থাকত। 

◾ভুতের গলি:

এখানে বৃটিশ একজন লোক থাকতেন নাম ছিল Mr. boot, তার নাম থেকে বুটের গলি, পরবর্তীকালে ভুতের গলি নাম হয়েছে। 

◾মহাখালি:

মহা কালী নামের এক মন্দীরের নাম থেকে হয়েছে বর্তমানের মহাখালী।

◾ইন্দিরা রোড:

এককালে এ এলাকায় "দ্বিজদাস বাবু" নামে এক বিত্তশালী ব্যক্তির বাসাস্থান, অট্টলিকার পাশের সড়কটি নিজেই নির্মাণ করে বড় কন্যা "ইন্দিরা" নামেই নামকরণ।

◾পিলখানা:

ইংরেজ শাসনামলে প্রচুর হাতি ব্যবহার করা হোতো। বন্য হাতিকে পোষ মানানো হোতো যেসব জায়গায়, তাকে বলা হোতো পিলখানা । বর্তমান  "পিলখানা" ছিলো সর্ববৃহৎ।

◾এলিফ্যানট রোড:

পিলখানা হতে হাতিগুলোকে নিয়ে যাওয়া হতো "হাতির ঝিল"এ গোসল করাতে, তারপর "রমনা পার্ক"এ রোঁদ পোহাতো। সন্ধ্যের আগেই হাতির দল পিলখানায় চলে আসতো। যাতায়াতের রাস্তাটির নামকরণ সেই কারণে এলিফ্যান্ট রোড। পথের মাঝে ছোট্ট একটি কাঠের পুল ছিলো, যার নামকরণ হোলো "হাতির পুল"।

◾কাকরাইল:

উনিশ শতকের শেষ দশকে ঢাকার কমিশনার ছিলেন মিঃ ককরেল। নতুন শহর তৈরী করে নামকরণ হোলো "কাকরাইল"।

◾রমনা পার্ক:

অত্র এলাকায় বিশাল ধনী রম নাথ বাবু মন্দির তৈরী করেছিলো "রমনা কালী মন্দির"। মন্দির সংলগ্ন ছিলো ফুলের বাগান আর খেলাধুলার পার্ক। পরবর্তীতে সৃষ্টি হয় "রমনা পার্ক"।

◾গোপীবাগ:

গোপীনাগ নামক এক ধনী ব্যবসায়ী ছিলেন। নিজ খরচে "গোপীনাথ জিউর মন্দির" তৈরী করেন। পাশেই ছিলো হাজারো ফুলের বাগান "গোপীবাগ"।

◾ওয়ারী: 

১৮৮৪ সালে ঢাকার রাজস্ব প্রশাসক বা ডিসট্রিক্ট কালেক্টরের নাম ছিল ফ্রেডরিক ওয়্যার। তিনিই মূলত কয়েকভাগে ভাগ করে পুরো এলাকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন শুরু করেন। যে ফ্রেডরিক ওয়্যার আজকের ওয়ারীর এলাকার গোড়াপত্তন করেছিলেন, তার নামেই এই ঢাকাই এলাকার নামকরণ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

◾টিকাটুলি:

হুক্কার প্রচলন ছিলো। হুক্কার টিকার কারখানা ছিলো যেথায় সেটাই "টিকাটুলি"।

◾মতিঝিল:

ইতিহাস মোগল সাম্রাজ্যের সময়কাল হতেই মতিঝিল এলাকার নাম শোনা যায়। এই এলাকাটি সেই সময় মির্জা মোহাম্মদের মহল হিসাবে গন্য হতো, যার মধ্যে ছিলো একটি পুকুর। শুরুতে সুকাকু মহলের পুকুর হিসাবে খ্যাত হলেও পরে এই পুকুরটি মতিঝিল নামে পরিচিত হয়ে উঠে, এবং এর নামানুসারেই এলাকাটির নামকরণ করা হয়।

◾গুলিস্তান:

গুলিস্তান ছিল একটি সিনেমাহলের নাম। এই সিনেমাহলটি রমনার ফুলবাড়িয়া রেলস্টেশনের উত্তরে, ঢাকা জেলা ক্রীড়া মিলনায়তন এবং পল্টন মাঠের পাশে ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। কলকাতার বিখ্যাত চিত্র ব্যবসায়ী ছিলেন খান বাহাদুর ফজল আহমেদ দোশানি। তিনি ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের ঢাকায় চলে আসেন। তাঁর হাত ধরেই পরবর্তীতে এই প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণ করা হয়। 

দেশের প্রথম শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এই হলটি এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল যে মানুষজন এই হলের নামেই এলাকাকে ডাকতে থাকে।

◾তোপখানা:

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর গোলন্দাজ বাহিনীর অবস্থান ছিল এখানে।

◾পুরানা পল্টন, নয়া পল্টন:

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর ঢাকাস্থ সেনানিবাসে এক প্ল্যাটুন সেনাবাহিনী ছিল, প্ল্যাটুন থেকে নামকরণ হয় পল্টন। পরবর্তীতে আগাখানিরা এই পল্টনকে দুইভাগে ভাগ করেন, নয়া পল্টন ছিল আবাসিক এলাকা আর পুরানো পল্টন ছিল বানিজ্যিক এলাকা।

◾বায়তুল মোকাররম নাম:

১৯৫০-৬০ দিকে প্রেসিডেন্ট আইয়ুবের সরকারের পরিকল্পনা পুরানো ঢাকা-নতুন ঢাকার যোগাযোগ রাস্তার। তাতে আগাখানীদের অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান,আবাসিক বাড়িঘর চলে যায়। আগাখানীদের নেতা আব্দুল লতিফ বাওয়ানী (বাওয়ানী জুট মিলের মালিক) সরকারকে প্রস্তাব দিলো, তারা নিজ খরচে এশিয়ার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ মসজিদ তৈরী করবে। এটা একটা বিরাট পুকুর ছিল "পল্টন পুকুর", এই পুকুরে একসময় ব্রিটিশ সৈন্যরা গোসল করতো। ১৯৬৮ সনে মসজিদ ও মার্কেট প্রতিষ্ঠিত হয়।

◾ধানমন্ডি:

এখানে এককালে বড় একটি হাট বসতো। হাটটি ধান ও অন্যান্য শস্য বিক্রির জন্য বিখ্যাত ছিল।

◾পরীবাগ:

পরীবানু নামে নবাব আহসানউল্লাহর এক মেয়ে ছিল। সম্ভবত পরীবানুর নামে এখানে একটি বড় বাগান করেছিলেন আহসানউল্লাহ।

◾পাগলাপুল:

১৭ শতকে এখানে একটি নদী ছিল, নাম–পাগলা। মীর জুমলা নদীর উপর সুন্দর একটি পুল তৈরি করেছিলেন। অনেকেই সেই দৃষ্টিনন্দন পুল দেখতে আসত। সেখান থেকেই জায়গার নাম "পাগলাপুল"।

◾ফার্মগেট:

কৃষি উন্নয়ন, কৃষি ও পশুপালন গবেষণার জন্য বৃটিশ সরকার এখানে একটি ফার্ম বা খামার তৈরি করেছিল। সেই ফার্মের প্রধান ফটক বা গেট থেকে এলাকার নাম হোলো ফার্মগেট।

◾শ্যামলী:

১৯৫৭ সালে সমাজকর্মী আব্দুল গণি হায়দারসহ বেশ কিছু ব্যক্তি এ এলাকায় বাড়ি করেন। এখানে যেহেতু প্রচুর গাছপালা ছিল তাই সবাই মিলে আলোচনা করে এলাকার নাম রাখেন শ্যামলী।

◾সূত্রাপুর:

কাঠের কাজ যারা করতেন তাদের বলা হত সূত্রধর। এ এলাকায় এককালে অনেক শূত্রধর পরিবারের বসবাস ছিলো। সেই থেকেই জায়গার নাম হোলো সূত্রাপুর।

©সংগৃহীত

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here

Pages